আজ বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:২১ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক :–
লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিএনপির দুপক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টা থেকে শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত থেমে থেমে উপজেলার উত্তর চরবংশী খাসেরহাট ও বাবুরহাট এলাকায় এই সংঘর্ষ হয়। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন।
এ সময় বাড়ি-ঘরে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও দুইটি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করা হয়। আহতদের উদ্ধার করে রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ স্থানীয় ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে। গুরুতর আহত দুজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ ঘটনায় শুক্রবার সন্ধ্যায় পর্যন্ত দু-পক্ষের মধ্যে চরম উত্তোজনা বিরাজ করছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ৫ আগস্টের পর মেঘনার চর, মাছঘাট, বাজার, কাঁচামালের আড়ত নিয়ে উত্তর চরবংশী ইউনিয়ন বিএনপির মধ্যে দুটি ধারা সৃষ্টি হয়। একটি পক্ষের নেতৃত্ব দেন উপজেলা কৃষক দলের সদস্যসচিব শামিম গাজী ও অপর পক্ষের নেতৃত্ব দেন ইউনিয়ন বিএনপি নেতা ফারুক কবিরাজ।
এলাকায় দলীয় প্রভাব বিস্তার নিয়েই মূলত তাদের মধ্যে অন্তঃকোন্দলের সৃষ্টি হয়। এর জের ধরে বৃহস্পতিবার সকালে মেঘনার পাড়ের চান্দারখালের এলাকায় উপজেলা কৃষকদলের সদস্যসচিবের টেবিলের পাশের ব্যানার ছিড়ে ফেলেন খাসেরহাট এলাকার বিএনপির কর্মী ফারুক গাজি। এ নিয়ে শামিম গাজির নেতৃত্বে তাঁর অনুসারীরা খাসেরহাট বাজারে ইউনিয়ন বিএনপির কার্যালয়ে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। এরপর ফারুক কবিরাজের নির্দেশে শামিম গাজীর অফিস ভাঙচুর করা হয়।
এ ঘটনার পর বৃহস্পতিবার গভীর রাতে আবারও দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। শুক্রবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কবির হোসেনের নেতৃত্বে শামিমের শ্বশুর শফিক রাঢ়ির বাড়িতে হামলা হয়। ওই সময় তারা শফিক রাঢ়িকে মারধর করে বাড়িঘর ভাঙচুর, মিজানের বাড়ি ও দোকানে হামলা, দুটি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট চালায়। এতে উভয়পক্ষের ১৫ জন আহত হয়।
আহতদের রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও স্থানীয় ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। এদের মধ্যে সফিক উল্যাহ রাঢ়ি ও লিন রাঢ়ি দুজনের অবস্থায় গুরুতর হওয়ায় তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
উপজেলা কৃষকদলের সদস্যসচিব শামিম গাজী বলেন, ফারুক কবিরাজের নির্দেশে নেতা-কর্মীর ওপর হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়েছে। এ ঘটনার জন্য বিএনপি নেতা ফারুক কবিরাজকে দায়ী করেন তিনি। শামিম গাজী বলেন, তাঁর ৫ সমর্থক আহত হয়েছে।
পাল্টা অভিযোগ করেন ইউনিয়ন বিএনপি নেতা ফারুক কবিরাজ। তিনি শামীম গাজীকে দায়ী করে বলেন, ব্যানার ছেঁড়াকে কেন্দ্র করে বিএনপি নেতা-কর্মীদের ওপর ও বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে ১০ নেতা-কর্মীকে আহত করে। দুইটি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করার পাশাপাশি কয়েকটি বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাট করে নিয়ে যায়।
রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিজাম উদ্দিন ভুঁইয়া বলেন, ঘটনাস্থলে সেনা সদস্যদের সাথে পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। তবে কয়েকটি বাড়ি ও আহতের বিষয়টি নিশ্চিত করা যায়নি। পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রনে রয়েছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ নিয়োজিত। এখনো কোনো মামলা ও গ্রেপ্তার হয়নি। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।