আজ বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:০২ অপরাহ্ন
খেলা ডেস্ক :-
রাজকীয়ভাবে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে পাহাড়ের তিন রত্ন কন্যাকে। সম্প্রতি সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ী রুপনা চাকমা, ঋতুপর্ণা চাকমা ও মনিকা চাকমাকে এই সংবর্ধনা দেয়া হয়। শুধু ক্রেস্ট কিংবা ফুলের সংবর্ধনা নয়, ছিল নগদ অর্থও। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ সংবর্ধনা পাহাড়ের নতুন খেলোয়াড়রাদেরও অনুপ্রেরণা দেবে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, শনিবার সকাল ৮টা। নানা রঙের ফুলে সাজানো একটি ছাদ খোলা বাস। বাসের সামনে বাদ্যযন্ত্রির দল। সাথে আছে মোটরসাইকেল র্যালি। এক ঝাঁক তরুণ-তরুণীকে নিয়ে রাঙামাটি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে থেকে রওনা হয় গাড়ির বহরটি। সবুজ পাহাড়ের আকাঁবাকাঁ সড়ক পেরিয়ে রাঙামাটি কাউখালী উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের বিদ্যালয় মাঠে পৌঁছায় গাড়ি বহর। এখানে আগে থেকেই অপেক্ষায় ছিলেন রুপনা চাকমা, ঋতুপর্ণা চাকমা ও মনিকা চাকমা। তাদের নিয়ে ছাদখোলা গাড়ি বহরটি আবার রওনা দেয় রাঙামাটি শহরের দিকে। শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে তাদের আনা হয় রাঙামাটি স্টেডিয়ামে। আগে থেকেই রঙ বেরঙের বেলুন আর ফুল দিয়ে সাজানো ছিল অস্থায়ী সংবর্ধনা মঞ্চ। এসময় দেশের জন্য গৌরব অর্জনকারী নারী ফুটবলারদের এক নজর দেখতে ভিড় জমে বিভিন্ন বয়সের মানুষের। অস্থায়ী মঞ্চে প্রথমে সংবর্ধনা জানান রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মো. মোশারফ হোসেন খান। রুপনা, ঋতুপর্ণা ও মনিকা চাকমার হাতে তুলে দেন ফুল ও ক্রেস্ট। তিন জনকে এক লাখ টাকা করে মোট তিন লাখ টাকার চেকও দেয়া হয়। একইভাবে রাঙামাটি সেনা রিজিয়নের ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শওকত ওসমান তিন রত্ন কন্যাকে তিন লাখ টাকার চেক প্রদান করেন। এছাড়া রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কাজল তালুকদারও তিন জনকে একলাখ টাকা করে তিন লাখ টাকার চেক প্রদান করেন। এছাড়া রাঙামাটি পৌরসভার পক্ষ থেকে ৫০ হাজার টাকা করে তিন জনকে দেড় লাখ টাকার চেক প্রদান করেন।
এমন সংবর্ধনা পেয়ে উচ্ছ্বসিত ছিলেন রুপনা চাকমা, ঋতুপর্ণা চাকমা ও মনিকা চাকমা। তারা বলেন, পাহাড়ের মেয়ে হয়ে আমরা বাংলাদেশের জন্য খেলতে পেরে খুবই আনন্দিত। আমাদের এ অর্জন রাঙামাটি ও খাগড়াছড়িবাসীর অনুপ্রেরণা। আমরা আমাদের জন্মস্থানের মানুষদের ভালোবাসা কখনো ভুলবো না।
এ সংবর্ধনার মধ্যে দিয়ে অনুপ্রেরণা তৈরি হবে পাহাড়ের নতুন খেলোয়াড়দেরও বলেন রাঙামাটি রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শওকত ওসমান। তিনি বলেন, পাহাড়ের এ কন্যাদের জয় একটা সম্প্রীতির মেলবন্ধন তৈরি করেছে। নতুন খেলোয়াড় উঠে আসার জন্য আজকের এ সংবর্ধনা একটি বড় প্লাটফর্ম। এ সংবর্ধনা থেকে আমরা যেমন তাদের অভিনন্দ জানাচ্ছি। তেমনি শিক্ষার্থীরা অনুপ্রেরণা পাবে খেলার প্রতি।
রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মো. মোশারফ হোসেন খান বলেন, আমরা চেষ্টা করেছি জয়ীদের যথাযত সম্মামনা দিতে। সংবর্ধনাটি উচ্ছ্বাসে পরিণত হয়েছে মানুষের মধ্যে। রাঙামাটিবাসী তাদের সংবর্ধনা দেখে আনন্দিত। আনন্দিত সাফ জয়ীরা। আমরা চেষ্টা করছি বিকেএসপি প্রতিষ্ঠা করতে রাঙামাটিতে। বিকেএসপি প্রতিষ্ঠা হলে পাহাড়ে হাজারো রুপনা, ঋতুপর্ণা ও মনিকা চাকমা তৈরি হবে। খেলার প্রতি আগ্রহ বাড়বে এ অঞ্চলের সন্তানদের।