আজ বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ০৩:৪১ পূর্বাহ্ন
মুহাম্মদ কাইসার হামিদ, কুলিয়ারচর (কিশোরগঞ্জ):
কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে গত দু’দিনে বিস্ফোরক মামলায় তদন্তে প্রাপ্ত সন্ধিগ্ধ হিসেবে আওয়ামী লীগের- ৩, ডাকাতি প্রস্তুতি মামলায়- ১ ও ওয়ারেন্টভূক্ত ১৬ জন আসামিকে গ্রেফতার করে জেলায় রেকর্ড অর্জন করেছে ওসি মো. হেলাল উদ্দিন পিপিএম।
গত ১৩ ও ১৪ জানুয়ারি সোম ও মঙ্গলবার কুলিয়ারচর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. হেলাল উদ্দিন পিপিএম এর দিক নির্দেশনায় ও নেতৃত্বে উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় চিরনি অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে পুলিশ প্রহরায় কিশোরগঞ্জ বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করেন। অভিযানে অংশগ্রহণ করেন থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই শুভ আহমেদ, এসআই আমিরুল বাহার, এসআই সুজন বিশ্বাস, এসআই রিপন কুমার বিশ্বাস, এসআই মঞ্জুরুল সহ এসআই, এএসআই ও কনস্টেবলবৃন্দ।
থানা পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, বিস্ফোরক আইনে দায়ের হওয়া মামলা নং -১৫ (৮)২৪ তদন্তে প্রাপ্ত সন্ধিগ্ধ হিসেবে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাসকান্দি গ্রামের মাওলানা নুরুল ইসলামের ছেলে হাবিবুল্লাহ কামাল (৫২), যুবলীগ নেতা পূর্ব গাইলকাটা গ্রামের হাজী মুর্শিদ মিয়ার ছেলে ওয়াসিম (৩৬) ও আওয়ামী লীগের সক্রিয় সদস্য উপজেলার নাসিরাকান্দা গ্রামের শরীফ মিয়ার ছেলে সজিব (৪০) কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গত ১৪ জানুয়ারি মঙ্গলবার বিকালে হাবিবুল্লাহ কামালকে তার গ্রামের বাড়ি মাসকান্দি থেকে, ওয়াশিম’কে কুলিয়ারচর-বাজরা রাস্তা থেকে গ্রেফতার করা হয়। অপর দিকে সজিব মিয়াকে ওইদিন রাত ১১টার দিকে তার বাড়ির সামনে রাস্তা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
কুলিয়ারচর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. হেলান উদ্দিন পিপিএম তাদের গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ জানায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ভৈরব-কিশোরগঞ্জ মহাসড়কের বাজরা বাসস্ট্যান্ডে বিস্ফোরক ঘটানোর অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মো. নয়ন মিয়া বাদী হয়ে গত বছরের ৩০ আগস্ট কুলিয়ারচর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নং- ১৫(০৮)২৪। বিস্ফোরক আইনে দায়ের হওয়া ওই মামলায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইমতিয়াজ বিন মুছা জিসান সহ ৮৪ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ১০০-২০০ জনকে আসামি করা হয়।
গ্রেফতারকৃতদের দাবী, তাদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সত্য নয় এবং তাদের নামে থানায় কোন মামলাও নেই।
অপর দিকে গত ১৩ ও ১৪ জানুয়ারি গ্রেফতারকৃত ওয়ারেন্টভূক্ত আসামিরা হলো- কুলিয়ারচর উপজেলার কাপাসাটিয়া গ্রামের মস্তু মিয়ার ছেলে রাকিব মিয়া (৩৫), রাকিব মিয়ার পিতা মস্তু মিয়া (৫০), পূর্ব গাইলকাটা গ্রামের মো. জহির উদ্দিনের ছেলে মো. অন্তর মিয়া (২৫), মীর হোসনের ছেলে মফিজ মিয়া (৩১), বড়খারচর গ্রামের মৃত ইউসুফ মিয়ার স্ত্রী আনোয়ারা বেগম, নলবাইদ গ্রামের মো. ওহিদ মিয়ার ছেলে মো. মুজাইল (২৩), কান্দিগ্রামের মৃত সাইফুল ইসলামের ছেলে মো. রয়েল মিয়া (১৯), নাপিতেরচর গ্রামের মৃত ছাত্তার মাস্টারের ছেলে মো. সুমন মিয়া (৪২), সূরুজ মিয়ার ছেলে অহিদ মিয়া (৫৭), ফরিদপুর গ্রামের মো. হাবিবুল্লাহ’র ছেলে ইমতিয়াজ আহম্মেদ, খলিলুর রহমান ভূইয়ার ছেলে মো. নূরুল্লাহ ভূইয়া, হোসেনপুর উপজেলার লাখু হাটি গ্রামের মানিক মিয়ার ছেলে মো. ইমরান (২২), আজমতুল্লাহ (২৬), জাফরাবাদ গ্রামের তাহের উদ্দিনের ছেলে সুমন মিয়া, ছমেদ মিয়ার ছেলে শাহ্ আলম (৪৬), পশ্চিম তারাকান্দি গ্রামের মোস্তফা কামালের ছেলে ফাহিম আহমেদ ফাহিম (২৪)। এছাড়া ডাকাতি প্রস্তুতি মামলার আসামী পার্শ্ববর্তী বাজিতপুর উপজেলার উত্তর ডুলজান গ্রামের মৃত শাফি মিয়ার ছেলে নূর আলম।
এব্যােপারে কুলিয়ারচর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. হেলাল উদ্দিন পিপিএম বলেন, কুলিয়ারচর থানার আইন শৃঙ্খলা বজায় রাখতে প্রতিদিন মাদক, জুয়া, বাল্যবিবাহ ও চুরি-ডাকাতি প্রতিরোধে ও ওয়ারেন্টভূক্ত আসামিদের গ্রেফতারসহ চিরনি অভিযান অব্যাহত থাকবে।