আজ বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০৪ পূর্বাহ্ন
আওয়ার ডেইলি বাংলাদেশ ডেস্ক:-
দেশের দক্ষিণাঞ্চলীয় দ্বীপজেলা ভোলায় আরো সাড়ে ছয় লাখ কোটি টাকার উত্তোলনযোগ্য গ্যাসের সন্ধান মিলেছে। এর পরিমাণ প্রায় ৫.১০৯ ট্রিলিয়ন ঘনফুট (টিসিএফ)। তথ্য বলছে, এক টিসিএফ গ্যাস দিয়ে দেশের এক বছরের গ্যাসের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব। তাহলে এই পুরো গ্যাসে বাংলাদেশ চলতে পারবে আরো অন্তত পাঁচ বছর।
জাতীয় দৈনিক কালের কন্ঠের আজকের সংখ্যায় প্রকাশিত সজীব আহমেদ এর করা একটি বিশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ভোলার শাহবাজপুর ও ইলিশায় ২.৪২৩ টিসিএফ এবং চর ফ্যাশনে ২.৬৮৬ টিসিএফ মজুদ গ্যাসের সন্ধান পাওয়া গেছে। এক গবেষণা প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। বাংলাদেশ এখন বিদেশ থেকে এলএনজি আমদানি করে গ্যাসের চাহিদা পূরণ করছে। স্পট মার্কেটে (খোলাবাজার) প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির দর ১০.৪৬ মার্কিন ডলার, সেই হিসাবে ৫.১০৯ টিসিএফ গ্যাসের মূল্য দাঁড়ায় প্রায় ছয় লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকা।
পেট্রোবাংলা ও বাপেক্সের সঙ্গে যৌথ চুক্তি অনুযায়ী রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত কম্পানি গ্যাজপ্রম চার বছর গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করে এই মজুদ গ্যাসের সন্ধান পেয়েছে। গবেষণাটি ২০২০ সালে শুরু হয়ে চলতি বছরের জুনে শেষ হয়। গবেষণা প্রতিবেদনটি সম্প্রতি জ্বালানি বিভাগ, পেট্রোবাংলা ও বাপেক্সে জমা দেওয়া হয়েছে।
গবেষণায় দেখা গেছে, ভোলার শাহবাজপুর থেকে ইলিশা পর্যন্ত ৬০০ বর্গকিলোমিটার থ্রিডি সিসমিক সার্ভে করা হয়েছে।
এতে ২.৪২৩ টিসিএফ উত্তোলনযোগ্য গ্যাসের মজুদ আবিষ্কৃত হয়েছে। ভোলার চরফ্যাশনে ১৫২.৬ লাইন কিলোমিটার টুডি সিসমিক সার্ভে করে ২.৬৮৬ টিসিএফ গ্যাসের মজুদ পাওয়া গেছে।
গ্যাজপ্রমের মুখপাত্র এলেক্সি বেলবেজিয়াভ বলেন, ‘এই গবেষণাটি আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুযায়ী পরিচালনা করা হয়েছে, যেখানে সিসমিক ডাটা, অয়েল লক ডাটা, কোর ডাটা বিশ্লেষণ করে গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রস্তুত করা হয়েছে। এখানে আধুনিক প্রযুক্তি ও সফটওয়্যার, সুপার কম্পিউটার সিস্টেম এবং উন্নত মানের ল্যাব ব্যবহার করার ফলে গবেষণার তথ্যগুলো খুবই নির্ভরযোগ্য। যার ওপর ভিত্তি করে উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করা হলে বাংলাদেশের জ্বালানি চাহিদার বেশির ভাগই পূরণ হবে।’
পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্রনাথ সরকার বলেন, ‘ভোলা এলাকা আমাদের সবচেয়ে সম্ভাবনাময়। গবেষণার প্রতিবেদন ধরে আমাদের কার্যক্রমগুলো চালিয়ে যাচ্ছি। এরই মধ্যে ভোলার গ্যাস জাতীয় গ্রিডে নিয়ে আসতে ভোলা থেকে বরিশাল, বরিশাল থেকে খুলনা গ্যাস পাইপলাইন করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে দ্রুত সময়ের মধ্যে এলএনজি ও সিএনজির মাধ্যমে ঢাকায় আনা হবে। শিগগিরই এটির একটি টেন্ডার দেওয়া হবে। এখন থেকে সব কাজ উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে হবে। একাধিক কম্পানিকে কাজের সুযোগ দেওয়া হবে। বিদেশ থেকে এলএনজি আমদানি সীমিত করে দেশীয় উৎস থেকে গ্যাসের সরবরাহ বাড়াতে নানা উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।