আজ বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:১৫ পূর্বাহ্ন

Logo
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের পথে কমলা হ্যারিস

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের পথে কমলা হ্যারিস

আওয়ার ডেইলি আন্তর্জাতিক ডেস্ক;-

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হওয়ার দৌড় থেকে বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সরে দাঁড়ানোর পর নতুন প্রার্থী কমলা হ্যারিসকে ঘিরে নির্বাচনি সমাবেশ শুরু করতে এক ঘণ্টারও কম সময় লেগেছিল ডেমোক্র্যাটদের। যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হওয়ার আকাঙ্ক্ষা নিয়ে চলতি বছরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের লড়াইয়ে সামিল হয়েছেন কমলা হ্যারিস।

তার প্রচার উদারপন্থী ভোটারদের পুনরুজ্জীবিত করেছে। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কমলা হ্যারিসের প্রচার তহবিলে জমা পড়েছে ৬৭.১ কোটি ডলার অনুদান, যা তার রিপাবলিকান প্রতিদ্বন্দ্বী ডোনাল্ড ট্রাম্পের সংগ্রহের প্রায় তিনগুণ। প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীর এই দৌড়ে কমলা হ্যারিসের রয়েছে ঘটনাবহুল ও বর্ণিল একটি সফর।

হ্যারিসের বেড়ে ওঠা, তার কর্মজীবন, রাজনীতিতে প্রবেশ, উল্লেখযোগ্য ঘটনাপ্রবাহ এবং কীভাবে তিনি প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ মহিলা প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হলেন সেই বিষয়ে কয়েকটা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তুলে ধরা হলো বিবিসি বাংলার এই প্রতিবেদনে।

ব্যক্তিগত জীবনকমলা হ্যারিস ক্যালিফোর্নিয়ার ওকল্যান্ডে অভিবাসী যুগলের পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তার মা ভারতীয় বংশোদ্ভূত এবং বাবা জ্যামাইকান আমেরিকান। কমলার যখন পাঁচ বছর বয়স, তখন তার বাবা-মায়ের বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে যায়। তারপর মূলত মা, শ্যামলা গোপালন হ্যারিসের কাছেই বড় হন তিনি।কমলা হ্যারিস জানিয়েছেন, তাকে এবং তার ছোট বোন মায়াকে ওকল্যান্ডের কৃষ্ণাঙ্গ সম্প্রদায়ের মাঝেই বড় করে তুলেছিলেন তার মা যিনি একজন ক্যান্সার গবেষক এবং নাগরিক অধিকারকর্মী ছিলেন।তার আত্মজীবনী ‘দ্য ট্রুথস উই হোল্ড’-এ তিনি লিখেছেন, “আমার মা খুব ভালভাবেই বুঝতে পেরেছিলেন তিনি দুজন কৃষ্ণাঙ্গ মেয়েকে লালন পালন করছেন।”“তিনি জানতেন যে তার নতুন দেশ মায়া এবং আমাকে কৃষ্ণাঙ্গ মেয়ে হিসাবে দেখবে এবং আমরা যাতে আত্মবিশ্বাসী, গর্বিত কৃষ্ণাঙ্গ নারী হয়ে উঠি তা নিশ্চিত করতে তিনি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিলেন।প্রসঙ্গত, শ্যামলা গোপালন হ্যারিস ভারতীয় ছিলেন। তার আদি বাড়ি ভারতের তামিলনাড়ুতে। ১৯৫৮ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি দেন।কমলা হ্যারিস হাওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন। ছাত্রাবস্থা থেকেই দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জাতিগত সম্পর্কের মতো রাজনৈতিক ইস্যু নিয়ে তিনি সোচ্চার হতে থাকেন।তার কর্মজীবনও বেশ সফল। কমলা হ্যারিসের স্বামী আইনজীবী ডাগ এমহফ। তার সঙ্গে একটা ব্লাইন্ড ডেটে আলাপ হয়েছিল কমলা হ্যারিসের।২০১৪ সালে এই যুগল বিয়ে করেন। ডাগ এমহফের সন্তান কোল এবং এলা কমলা হ্যারিসকে মোমালা বলে ডাকে।তার পারিবারিক জীবন সম্পর্কে কমালা হ্যারিস এলি ম্যাগাজিনকে বলেছিলেন, “রবিবারের নৈশভোজ আমাদের কাছে পারিবারিক সময়। কোল টেবিল সেট করে এবং সংগীত বাছাই করে। এলা ডেসার্ট (মিষ্টান্ন) তৈরি করে, ডাগ আমার স্যুস-শেফ হিসাবে কাজ করে এবং আমি রান্না করি।

কর্মজীবনআইনজীবী হিসাবে কর্মজীবন শুরু করেছিলেন কমালা হ্যারিস। আলামেডা কাউন্টির ডিসট্রিক্ট অ্যাটর্নির দফতরে কর্মরত ছিলেন তিনি। এরপর সান ফ্রান্সিসকোর ডিসট্রিক্ট অ্যাটর্নি হিসাবে কাজ করেছেন।ক্যালিফোর্নিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল হিসাবে, আমেরিকার সবচেয়ে জনবহুল রাজ্যে শীর্ষ আইনজীবীর দায়িত্বও পালন করেছেন কমলা হ্যারিস। তিনিই প্রথম নারী এবং প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তিত্ব যিনি এই পদে দায়িত্ব সামলেছেন। তার এই সাফল্য ২০১৬ সালের ক্যালিফোর্নিয়ার সেনেটর নির্বাচনের প্রচারে গতি আনে এবং তার বিজয় নিশ্চিত করে।এরপর ২০২০ সালে ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসাবে মনোনীত হওয়ার জন্য প্রচারণা চালান। কিন্তু প্রাথমিক পর্যায়েই সেই দৌড় থেকে বেরিয়ে যান তিনি। শুরুর দিকে তার প্রচার সভাগুলোয় বিপুল জনসমাগম ও বিতর্ক অনুষ্ঠান সরগরম হওয়া সত্ত্বেও কমলা হ্যারিস তার মতাদর্শ ও নীতিনির্ধারণী প্ল্যাটফর্ম স্পষ্ট করতে পারেননি। অল্প সময়ের মধ্যেই তার সেই প্রচার গতি হারিয়ে ফেলে। তাকে স্পটলাইটে ফিরিয়ে আনেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

রাজনীতিতে প্রবেশপ্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রার্থী হিসাবে মনোনীত হওয়ার পরই জো বাইডেন তার রানিং মেট হিসাবে কমলা হ্যারিসকে বেছে নিয়েছিলেন। তার সম্পর্কে বাইডেন বলেছিলেন, “কমলা স্মার্ট, শক্ত, অভিজ্ঞ এবং একজন প্রমাণিত যোদ্ধা।”একসঙ্গে তারা ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং তার রানিং মেট মাইক পেন্সকে পরাজিত করেন।কমলা হ্যারিসকে বাইডেনের নির্বাচনি প্রচারের সময় পিছনের আসনে দেখা গেলেও এই সাফল্যে একজন নারী এবং কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তিত্ব হিসাবে তার বড় ভূমিকা রয়েছে বলে মনে করা হয়। এর কারণ হলো কৃষ্ণাঙ্গ নারীদের ভোটের ৯০ শতাংশ তাদের ঝুলিতে ছিল।

Please Share This Post in Your Social Media

All rights reserved © 2024 ourdailybangladesh.com