আজ শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৫১ পূর্বাহ্ন
আক্কাছ আলী (মুন্সীগঞ্জ) প্রতিনিধি:
মুন্সীগঞ্জে দুই সপ্তাহের ব্যবধানে আলুর মূল্য বেড়ে সকল রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। উৎপাদক পর্যায়ে ২৮ টাকার আলু দুই সপ্তাহ আগে কেজি প্রতি ৬০ দরে বিক্রি হলেও সেই আলু এখন কেজিতে বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৭৫ টাকায়।
এদিকে আলুর মূল্য বৃদ্ধি নিয়ে খুচরা ও পাইকারী ব্যবসায়ীরা পাল্টাপাল্টি দোষারোপ করছে একে অপরকে। আলুর দাম বাড়ার জন্য খুচরা বিক্রেতারা দায়ী করছেন পাইকারদের। আর পাইকাররা দুষছে হিমাগার সিন্ডিকেটকে। পাইকারদের অভিযোগ, আলুর বাজার এখন নিয়ন্ত্রণ করছে হিমাগার কেন্দ্রিক সিন্ডিকেট তথা মজুতদার। ফলে পর্যাপ্ত মজুত থাকার পরও রেকর্ড দরে আলু কিনতে বাধ্য হচ্ছেন তারা।
অন্যদিকে অস্বাভাবিক দামে আলু ক্রয় করতে হওয়ায় ক্ষোভে ফুঁসছেন ভোক্তারা। তাদের অভিযোগ, আলুর বেশির ভাগই নিয়ন্ত্রণ এখন বড় মজুতদারদের হাতে। হিমাগার কেন্দ্রিক সিন্ডিকেট ভাঙতে না পারা এবং ঢিলেঢালা বাজার মনিটরিং এর কারনে জেলায় পর্যাপ্ত মজুত থাকার পরও অস্বাভাবিক দামে আলু ক্রয় করতে হচ্ছে ভোক্তাদের। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি বলে অভিযোগ ভোক্তাদের।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হিমাগারে আলু সংরক্ষণের পরই শুরু হয় দাম বাড়ানোর খেলা। বর্তমানে জেলার ৫৪ হিমাগারে মজুত আছে ১ লাখ ৫১ হাজার মেট্রিক টন আলু। এর মধ্যে ৭১ হাজার মেট্রিক টন রয়েছে খাবার আলু, আর সেই খাবার আলু নিয়েই চলছে অসাধু সিন্ডিকেটের কারসাজির ব্যস্ততা। এরই অংশ হিসেবে অসাধু সিন্ডিকেট বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য উৎপাদনের শীর্ষ জেলা মুন্সীগঞ্জের হিমাগারগুলো থেকে নিয়ন্ত্রিতভাবে বের করছে আলু।
পাইকারী ও খুচরা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বর্তমানে হিমাগার গেট, পাইকারি ও খুচরা দামে বড় তফাৎ লক্ষ্য করা গেছে। হিমাগার গেটে এখন কেজি প্রতি ৫৬ থেকে ৬৩ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। অথচ দুই সপ্তাহ আগে বিক্রি হয় ৪৭ টাকা দরে। দুই সপ্তাহ আগে পাইকারী বিক্রি হয় ৫২ টাকা দরে। সেই আলু এখন পাইকারিতে বিক্রি হচ্ছে ৬৩ থেকে ৬৮ টাকা দরে। একই সময়ে খুচরা বাজারে ৫৮ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া আলু এখন খুচরা বাজারে কেজিতে বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৭৫ টাকায়। এই অবস্থায় মুন্সীগঞ্জে আলুর দর বর্তমানে আগের সকল রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে।অথচ গত বছরের এই সময়ে খুচরা বাজারে আলুর দাম ছিল ৪৫ থেকে ৫০ টাকা।
ভোক্তারা বলেছেন, মজুত করে বাজারে আলুর দাম বাড়াচ্ছে সিন্ডিকেটকারীরা। বাজার মনিটরিংয়ের দায়িত্বে থাকা কৃষি বিপণন বিভাগ সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা না নেওয়ায় বাজারের অস্থিরতা দেখা দিয়েছে।
এ প্রসঙ্গে মুন্সীগঞ্জের জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা সামির হোসেন সিয়াম বলেন, ফোনে ফোনেই মজুতদাররা আলুর দাম নির্ধারণ করছেন। ফলে তাদের নির্ধারিত দামেই সারা দেশে বিক্রি হয় আলু। এতে বাজারে বেড়েছে দাম। তারপরও চলছে বাজার নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা।
উল্লেখ্য, গত মৌসুমে মুন্সীগঞ্জে জেলায় ১০ লাখ ৩৬ হাজার ২৫৫ মেট্রিক টন আলু উৎপাদন হয়। আর এবার ৩৪ হাজার ৬৬৫ হেক্টরের লক্ষ্য নিয়ে শুরু হয়েছে নতুন মৌসুমের আলু রোপণ