আজ বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:০৬ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক :–
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় গর্তে ঢুকিয়ে পোড়ানো হয়েছে এক নারীর মরদেহ। এরআগে শরীর থেকে মাথা কেটে বিচ্ছিন্ন করা হয়। সেটি অন্যত্র মাটিতে পুঁতে রাখা হয়। এ ঘটনা হয়েছে মঙ্গলবার ভোরে উপজেলার গাজীরবাজারে।
খবর পেয়ে সকালে পোড়া মরদেহটি উদ্ধার করে পুলিশ। ওই সময়ে ঘটনায় জড়িত সন্দেহ স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় ফারহান রনি নামে এক যুবককে আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশের ধারণা, জোর করে ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে হত্যা করা হয় ওই নারীকে।
আটক ফারহান উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহনেওয়াজ ভুইয়ার ছেলে। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তিনি হত্যার ঘটনায় জড়িত বলে স্বীকার করেন এবং কাটা মাথার সন্ধান দেন।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, গাজীরবাজার এলাকার এক ব্যক্তির বাড়ি থেকে একটি রাজহাঁস চুরি হয়। মঙ্গলবার সকাল ৭টার দিকে হাঁস খুঁজতে এসে স্থানীয় শাহনেওয়াজ ভূইয়ার বাড়িতে পরিত্যক্ত একটি টিনের ঘর থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখেন তারা। সেখানে থাকা ফারহান রনি জানান, তিনি পাতা পোড়াচ্ছেন। তার এ কথায় বিশ্বাস না হলে হাঁসের খোঁজে আসা দুই ভাই এনামুল ও রোমান এবং তাদের চাচাতো ভাই উবায়দুল ঘরের ভেতরে কী তা দেখতে চান।
এ সময় ফারহান ক্ষুব্ধ হয়ে তাঁদেরকে মারার হুমকি দেন। এতে সন্দেহ বাড়লে এই তিনজন গ্রামের আরও লোকজনকে সঙ্গে নিয়ে গর্তে মরদেহ পুড়তে দেখেন। এরপর পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে মরদেহ বের করে। এরইমধ্যে দেহের বেশিরভাগ অংশ পুড়ে যায়।
এ সময় মরদেহটি নারী নাকি পুরুষের তা নিশ্চিত হতে পারছিল না পুলিশ । পরে হাতে চুড়ি দেখে নারীদেহ বলে ধারণা পায় তারা। এর পর দুপুরে রনির দেখানো জায়গা থেকে ওই নারীর মাথাটি উদ্ধার করে পুলিশ। এরপরই ওই নারীর পরিচয় পাওয়া যায়। ওই নারী হলেন– উপজেলার হীরাপুর এলাকার নুরুল ইসলাম বেপারীর স্ত্রী হরলুজা বেগম (৫০)।
আখাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ছমি উদ্দিন জানান, ফারহান মাদকাসক্ত। তাঁর বিরুদ্ধে মাদক ও চুরির মামলা রয়েছে। ঘটনার শিকার ওই নারী তাঁদের বাড়িতে দীর্ঘদিন ধরে ঘর করে থাকতেন। আজ ওই নারীকে রনি তাঁর বাসায় ডেকে নিয়ে যান।
ওসি বলেন, ধারণা করছি, জোর করে তাঁর সঙ্গে অবৈধ কাজ করার চেষ্টা করেন রনি। তাতে বাধা দেন তিনি। এ নিয়ে সকাল সাড়ে ৬টার পর ছুরি দিয়ে হত্যা করে এবং মাথা ও দেহ দ্বিখণ্ডিত করেন রনি। এরপর মাথাটি সেখানকার একটি পুকুরের দক্ষিণ পাড়ে পুঁতে রাখেন। আর দেহটি বাজারের কাছেই তাঁদের আরেকটি ঘরে নিয়ে পুড়িয়ে ফেলেন। আটক যুবকের তথ্যমতে, মাথা উদ্ধার করে পরিচয় শনাক্ত করা হয়। কীভাবে কী ঘটানো হয়েছে তা জানার চেষ্টা চলছে।