আজ বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:১৭ অপরাহ্ন

Logo
ফরিদপুরেঐতিহ্যবাহী  খেজুর গুড় তৈরিতে ব্যস্ত খেজুর গাছীরা

ফরিদপুরেঐতিহ্যবাহী  খেজুর গুড় তৈরিতে ব্যস্ত খেজুর গাছীরা

স্টাফ রিপোর্টার আব্দুস সালাম মোল্লা

কাকডাকা ভোরে খেজুরের রস সংগ্রহে বেরিয়ে পড়েন গাছিরা। গাছ থেকে নামিয়ে আনেন রস ভর্তি হাঁড়ি। এরপর তা নিয়ে ছোটেন চুলার কাছে। টিনের বড় পাত্রে রস ঢেলে জ্বাল দিয়ে শুরু হয় গুড় তৈরির প্রক্রিয়া। আস্তে আস্তে রস শুকিয়ে রূপ নেয় সুস্বাদু গুড়ে।

সরেজমিনে দেখা যায়, ফরিদপুর সদরপুর ও চরভদ্রাসনে গ্রামীণ জনপদে থাকা খেজুর গাছের সুস্বাদু রস সংগ্রহ করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন গাছিরা। এবার ফরিদপুরে অন্তত ১০ হাজার খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহের কাজ করছেন সহস্রাধিক গাছি। ফরিদপুরে এক হাড়ি রস ৫০০ টাকা ও এক কেজি গুড় ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে সদরপুর উপজেলার চরবিষ্ণপুর গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, গ্রামীণ জনপদে থাকা খেজুর গাছের সুস্বাদু রস সংগ্রহ করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন গাছিরা। জীবনের ঝুকি নিয়ে ৩০ থেকে ৪০ ফিট লম্বা খেজুর গাছে উঠে রস সংগ্রহ করে বাড়িতে আনছেন। পরে সেই রস জ্বালিয়ে সুস্বাদু পাটালি গুড় তৈরি বাজারে বিক্রি শুরু করেছেন। দামও পাচ্ছেন ভাল।

গাছিরা বলেন, আগের দিন বিকেলে গাছ কেটে হাঁড়ি বসানো হয়। পরের দিন ভোরবেলা রস সংগ্রহ করে গুড় তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হয়। উৎপাদিত গুড় বাজারে বিক্রির পাশাপাশি স্থানীয়দের কাছেও বিক্রি করা হয়।

রাজশাহী থেকে আশা গাছি শেখ শরীফ জানান, এই এলাকায় অন্তত শতাধিক খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করছি। শীতের প্রথম থেকেই আমরা দুজন রস সংগ্রহের কাজে যুক্ত আছি। অনেক কষ্ট হয় খেজুরের রস সংগ্রহ করতে। তবে দাম ভাল হওয়ায় কষ্ট আর গায়ে লাগে না। শীত মৌসুমে এই কাজ করে ৬ মাস স্বাচ্ছন্দ্যে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করতে পারবো।

গুড় ক্রেতা মুন্সি আলিমুজ্জামান বলেন, এখনকার সময়ে ভেজালমুক্ত জিনিস পাওয়াই দুস্কর। খোজ পেলাম এখানে ভেজালমুক্ত রস ও গুড় তৈরি হয়, তাই নেয়ার জন্য গাছি ও উৎপাদনকারীদের কাছে ছুটে আসা।

খেজুর গুড়ের ঐতিহ্য ধরে রাখতে নিজ উদ্যোগে ৬শ গাছ কিনেছেন তরুণ উদ্যোক্তা এনামুল হাসান গিয়াস। তিনি জানান, রাজশাহী ও যশোরসহ বিভিন্ন অঞ্চল থেকে গাছিদের আনতে হয়। এতে খরচ অনেকটা বেড়ে যায়, তাছাড়া খেজুর গাছে উঠার ঝুকি বেশি থাকায় দিন দিন গাছির সংকট দেখা দিচ্ছে।

কৃষি বিভাগ বলছে, নতুন করে খেজুর গাছ লাগানোর পাশাপাশি উদ্যোক্তাদের সহযোগিতা দেয়া হচ্ছে। ফরিদপুরে ছোট-বড় দেড় লাখের বেশি খেজুর গাছ রয়েছে।

ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মোঃ শাহাদুজ্জামান বলেন, দেশের অনেক জায়গাতেই ভেজাল গুড় তৈরি হয়। তবে ফরিদপুরের তরুণ উদ্যোক্তাদের মধ্যে এ প্রবণত নেই।  তাই খেজুর গাছ লাগানোর পাশাপাশি তাদের নানা বিষয়।

Please Share This Post in Your Social Media

All rights reserved © 2024 ourdailybangladesh.com