আজ বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:৪০ অপরাহ্ন
মারুফ আহম্মেদ,খুবি প্রতিনিধি
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মারধর ও শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় সোনাডাঙ্গা বাস টার্মিনালে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শ্রমিকদের সংঘর্ঘের ঘটনা ঘটেছে। এসময় শ্রমিকরা ধারালো অস্ত্র, পিস্তল এবং লাঠিসোঁটা নিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর আক্রমণ করলে কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছে।
বুধবার (৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা থেকে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটতে থাকে। এ সময়ে শ্রমিক এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করে। তবে পরবর্তীতে সেনা, নৌ ও পুলিশ সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
প্রত্যক্ষদর্শী এবং শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলা জানা যায় ঘটনার সূত্রপাত ঘটে খুবির এক শিক্ষার্থী গোপালগঞ্জ থেকে রাজীব পরিবহনের এক বাসে আসার সময় হেলপারকর্তৃক মারধরের শিকার হলে।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ইংরেজি ২৩ ব্যাচের ইসলাম মোড়ল জানান, আজকে বিকাল ৫ টায় গোপালগঞ্জে থেকে আসার সময় আমি ১৫০ টাকা দিয়ে টিকিট কিনি রাজীব পরিবহনে। আমার শরীর জ্বর থাকায় কথা ছিলো আমাকে সিট দিবে। কিন্তু বাসে উঠে দেখি সিট নেই। সুপারভাইজার আমাকে পরের স্টেশনে সিট দেয়ার কথা বলে। কিন্তুু তখনও সিট ফাঁকা হয়নি এবং সুপারভাইজার নেমে যাই। পরবর্তীতে বাসের হেলপারকে বললে তিনি আমার সাথে খারাপ ব্যবহার করেন এবং বলেন সিট হবেনা দাঁড়িয়েই যেতে হবে।
তবে সমস্যা তৈরি হয় যখন তারা আমাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিকটবর্তী জিরোপয়েন্টে না নামিয়ে সোনাডাঙ্গা নিয়ে আসে। এসময় তারা আমার ফোন নিয়ে নেয়। এখানে আনার পর বাসের মধ্যে তারা কয়েকজন আমাকে এলোপাতাড়ি মারতে থাকে এবং জামা খুলে নেয়। পরবর্তীতে আমার সিনিয়র এবং ব্যাচমেটরা সেখানে আসলে কথা-কাটাকাটির জের ধরে পরিবহন শ্রমিকরা ধারালো অস্ত্রসহ লাঠিসোঁটা নিয়ে তাদেরকেও মারধর করেন।
জানা যায় শ্রমিকদের মারধরে আশিক, সিয়াম, জিসান আহমেদ, অরুপ বসু, হৃদয় ও শাহরিয়ার পারভেজ সাদসহ অনেক শিক্ষার্থী আহত হন। এ সময় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়সহ খুলনার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী সোনাডাঙ্গা বাস টার্মিনাল এলাকায় জড়ো হন এবং সড়ক অবরোধ করে শিক্ষার্থী ও শিক্ষক লাঞ্ছনার বিচার দাবি করেন। এক পর্যায়ে তারা শ্রমিকদের ধাওয়া দেন। দুই পক্ষের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ায় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় বেশ কয়েকটি যানবাহন ভাঙচুর, ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে।
খবর পেয়ে সেনাবাহিনী, পুলিশ, নৌবাহিনীসহ যৌথ বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে আসেন এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের আনেন।
সোনাডাঙ্গা থানা পুলিশের ওসি (তদন্ত) হাওলাদার সানওয়ার মাসুম বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘যৌথ বাহিনীসহ আমরা উভয় পক্ষকে শান্ত করার চেষ্টা করছি। এখানে অতিরিক্ত আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
পরবর্তীতে সোনাডাঙ্গা থানায় পুলিশ, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ, বাংলাদেশ আর্মি ও নৌবাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতিতে শিক্ষার্থীরা সকাল দশটার মধ্যে দোষীদের গ্রেফতার করা, অভিযান চালিয়ে অবৈধ অস্ত্রধারীদের আটক করা সহ যেসকল পুলিশ সদস্যরা শিক্ষার্থীদের সাথে অসহযোগিতামূলক আচরণ করেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আল্টিমেটাম দেন।