আজ বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:২৫ পূর্বাহ্ন
মাসুদা আক্তার রিফা,পবিপ্রবি প্রতিনিধি
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবিপ্রবি) কৃষি অনুষদের ২০২৩-২৪ সেশনের শিক্ষার্থী হুসাইন মোহাম্মদ আশিক পানিতে ডুবে মর্মান্তিকভাবে মৃত্যুবরণ করেছেন। এই ঘটনায় চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে পটুয়াখালী সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে।
সোমবার (১৪ এপ্রিল) দুপুর ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংলগ্ন জনতা কলেজের পুকুরে কয়েকজন বন্ধু মিলে গোসল করতে গেলে এ দুর্ঘটনা ঘটে। আশিক পানিতে ডুবে আহত হলে প্রথমে তাকে দুমকী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য পটুয়াখালী সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
মর্মান্তিক এই মৃত্যুর ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। আশিক কুড়িগ্রাম জেলার রাজারহাট উপজেলার তালুক সুবল গ্রামের বাসিন্দা। তিনি নুর আলম সরদার ও বিলকিস আক্তার বেগমের ছেলে।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, প্রাথমিক চিকিৎসায় চরম গাফিলতি করা হয়েছে। তারা জানান, হাসপাতালে পৌঁছানোর প্রায় ৪৫ মিনিট পর একজন চিকিৎসক রোগী দেখতে আসেন। পরবর্তীতে আশিকের মৃত্যু হলে সহপাঠীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে চিকিৎসকের গাফিলতির অভিযোগ তুলে হাসপাতাল চত্বরে উচ্চবাচ্য শুরু করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পরে পুলিশ ও সেনা সদস্য মোতায়েন করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একই সেশনের শিক্ষার্থী মো. সাকিব বলেন, “সময়ে চিকিৎসা পেলে আমার বন্ধুর এমন মর্মান্তিক মৃত্যু হতো না। চিকিৎসকের গাফিলতির কারণেই আমরা তাকে হারালাম।”
শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের উপস্থিতিতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। পটুয়াখালী সিভিল সার্জন ডা. মো. খালেদুর রহমান মিয়াকে আহ্বায়ক করে গঠিত আট সদস্যের এ কমিটিতে রয়েছেন—পটুয়াখালীর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. তারেক হাওলাদার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাজেদুল ইসলাম, পবিপ্রবির প্রক্টর প্রফেসর আবুল বাশার খান, বিশ্ববিদ্যালয়ের হেলথ কেয়ার সেন্টারের ডা. নিজাম উদ্দিন এবং শিক্ষার্থী প্রতিনিধি হিসেবে মঈন উদ্দিন, নুরে আল ফাহাদ ও মীম সাদাত শাহরিয়ার।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পবিপ্রবির প্রক্টর ও তদন্ত কমিটির সদস্য প্রফেসর আবুল বাশার খান বলেন, “ঘটনাটি জানার পরপরই আমরা দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করি এবং তাকে পটুয়াখালী সদর হাসপাতালে নিয়ে যাই। এটি একটি মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। যদি কারো গাফিলতি প্রমাণিত হয়, তাহলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”