আজ মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৫, ১১:৪৫ অপরাহ্ন
মাসুদা আক্তার রিফা,পবিপ্রবি প্রতিনিধি:
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পবিপ্রবি) বর্ণিল আয়োজন ও উৎসবমুখর পরিবেশে উদযাপিত হয়েছে বাংলা নববর্ষ ১৪৩২।
সোমবার সকাল সাড়ে ৮টায় আনন্দ শোভাযাত্রা, আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক পরিবেশনা ও ঘুড়ি উৎসবসহ নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে নতুন বছরের সূচনা করা হয়।
চৈত্রসংক্রান্তির মাধ্যমে ১৪৩১ বঙ্গাব্দকে বিদায় জানিয়ে ঐতিহ্যবাহী বাঙালি সংস্কৃতির আবহে নতুন বছরকে বরণ করা হয়। বর্ষবরণের এই আয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মুখরিত হয় রঙিন সাজসজ্জায়। মুখোশ, পোস্টার, প্ল্যাকার্ড ও শিল্পকর্মে ফুটে ওঠে বাঙালিয়ানার বৈচিত্র্য এবং ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতির বার্তা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবন থেকে শোভাযাত্রা শুরু হয়ে শহীদ জিয়া হল, দক্ষিণ গেট, পূর্ব গেট, একাডেমিক ভবন হয়ে টিএসসির সামনে গিয়ে শেষ হয়। উৎসবকে ঘিরে সকাল থেকেই শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন বয়সী মানুষের উপস্থিতিতে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো ক্যাম্পাস।
শোভাযাত্রা শেষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও গবেষক প্রফেসর ড. কাজী রফিকুল ইসলাম।
উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি বলেন, “পহেলা বৈশাখ আমাদের প্রাণের উৎসব। এটি শুধু নতুন বছরের সূচনা নয়, বরং হাজার বছরের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও জাতিসত্তার প্রতিচ্ছবি। আজকের আয়োজন আমাদের ভ্রাতৃত্ব, ঐক্য এবং প্রতিবাদী চেতনার বহিঃপ্রকাশ। ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতির প্রতীক হিসেবে শোভাযাত্রায় পতাকা ব্যবহারের মধ্য দিয়ে আমরা বিশ্বমানবতার পাশে থাকার বার্তা দিয়েছি।”
তিনি আরও বলেন, “শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ এবং সাংস্কৃতিক চর্চার মধ্য দিয়ে আমরা একটি মূল্যবোধনির্ভর সমাজ গঠনের প্রত্যাশা করি। এই আয়োজন শিক্ষার্থীদের মনন ও নৈতিক মূল্যবোধকে সমৃদ্ধ করবে।”
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নববর্ষ উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক প্রফেসর ড. মো. হাবিবুর রহমান এবং সঞ্চালনায় ছিলেন ডেপুটি রেজিস্ট্রার ড. মো. আমিনুল ইসলাম।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এস এম হেমায়েত জাহান, কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর মো. আবদুল লতিফ এবং রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. মো. ইকতিয়ার উদ্দিন।
আলোচনা সভা শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘আলোকতরী’র পরিবেশনায় অনুষ্ঠিত হয় বর্ণাঢ্য ফ্ল্যাশ মব। পরে ভাইস-চ্যান্সেলর, শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সদস্যরা পান্তা-ইলিশ ও ভর্তা উৎসবে অংশ নেন। ঐতিহ্যবাহী পিঠা, পায়েশসহ নানা খাবারের আয়োজন দর্শনার্থীদের আনন্দে ভরিয়ে তোলে।
উৎসবের অন্যতম আকর্ষণ ছিল ঘুড়ি উড়ানোর প্রতিযোগিতা। এতে অংশগ্রহণকারী শতাধিক প্রতিযোগীর মধ্যে প্রথম হন জনসংযোগ বিভাগের ডেপুটি ডিরেক্টর মো. মাহফুজুর রহমান সবুজ, দ্বিতীয় প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. এস এম হেমায়েত জাহান এবং তৃতীয় স্থান অধিকার করেন কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর মো. আবদুল লতিফ।
পুরো আয়োজন সফলভাবে সম্পন্ন করতে সহযোগিতা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদ, বিভাগ, সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং সৃজনী বিদ্যানিকেতন স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।