আজ বৃহস্পতিবার, ১৩ মার্চ ২০২৫, ০৫:০০ পূর্বাহ্ন
আব্দুল মান্নান পটুয়াখালী প্রতিনিধি
পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় কোস্টগার্ড সদস্য মোস্তফা সাদিকের ওপর হামলার ঘটনায় উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিম সিকদারসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার (১১ মার্চ) কোস্টগার্ডের আন্দারমানিক স্টেশনের পেটি অফিসার নেসারুল ইসলাম বাদী হয়ে কলাপাড়া থানায় এ মামলা দায়ের করেন।
হামলার শিকার মোস্তফা সাদিক কোস্টগার্ডের আন্দারমানিক (পায়রা বন্দর) স্টেশনের গোয়েন্দা সদস্য হিসেবে কর্মরত। মামলায় উল্লেখযোগ্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন সেলিম সিকদারের ভাই উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মামুন সিকদার, পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুজ্জামান, নীলগঞ্জ ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও পাঁচ-ছয়জনকে মামলায় আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহার অনুযায়ী, ৮ মার্চ সন্ধ্যা সাতটার দিকে কলাপাড়া বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন চৌরাস্তায় দায়িত্ব পালনের সময় কোস্টগার্ড সদস্য মোস্তফা সাদিকের ওপর অতর্কিত হামলা চালানো হয়। অভিযোগে বলা হয়েছে, হামলাকারীরা পরিচয় জেনেও তাঁকে মারধর করে এবং প্রাণনাশের হুমকি দেয়। এ সময় তারা দাবি করে যে, কলাপাড়া উপজেলা প্রশাসন তাদের কথামতো পরিচালিত হয়। মামলায় সরকারি গোয়েন্দা কাজে বাধা, সামরিক সদস্যকে লাঞ্ছিত ও মারধরের অভিযোগ আনা হয়েছে।
এ বিষয়ে কলাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ জুয়েল ইসলাম জানান, ‘কোস্টগার্ড সদস্যের ওপর হামলার ঘটনায় ইতোমধ্যে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে অন্যান্য আসামিদের বিরুদ্ধেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এ মামলাকে ‘মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক’ বলে দাবি করেছেন উপজেলা ও পৌর বিএনপির নেতারা। আজ বুধবার (১২ মার্চ) সকাল ১০টায় স্থানীয় বিএনপির উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা ‘নেতৃবৃন্দের নামে মামলা কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘ষড়যন্ত্রের কালো হাত ভেঙে দাও’—এমন নানা স্লোগান দেন এবং পৌর শহরের বিভিন্ন এলাকা প্রদক্ষিণ করেন।
পরে শহরের মনোহরীপট্টিতে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য দেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি হুমায়ুন সিকদার, সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান, পৌর বিএনপির সভাপতি গাজী মোহাম্মদ ফারুক ও সাধারণ সম্পাদক মুসা তাওহীদ নাননু মুন্সী। তারা অভিযোগ করেন, বিএনপিকে রাজনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতেই এ মামলা দেওয়া হয়েছে। দ্রুত এ মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান তারা।
স্থানীয় রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, এ ঘটনায় কলাপাড়ার রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। পুলিশ ও প্রশাসন বলছে, তদন্তের ভিত্তিতেই পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তবে বিএনপি নেতাদের দাবি, এ মামলার নেপথ্যে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য কাজ করছে।