আজ বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০১:০০ পূর্বাহ্ন
পবিপ্রবি প্রতিনিধি:
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পবিপ্রবি) ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ থাকা সত্ত্বেও প্রকাশ্যে পবিপ্রবি ছাত্রদলের কর্মীসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির কনফারেন্স হলে এই কর্মীসভা অনুষ্ঠিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ থাকার পরও প্রকাশ্যে এই কর্মসূচি আয়োজন করায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
কর্মীসভায় অংশগ্রহণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোর গণরুম থেকে শিক্ষার্থীদের জোরপূর্বক কর্মীসভায় নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। গণরুমের কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, প্রোগ্রামে অংশ না নিলে তাদের বিছানাপত্র ফেলে দেওয়ার এবং হল থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে। এমনকি প্রোগ্রাম শেষে তাদের সাথে দেখা করার জন্য পুনরায় আসবে এমন মন্তব্যও করেছে। প্রতিবেদকের হাতে এ সংক্রান্ত বেশ কিছু তথ্য ও প্রমাণ সংরক্ষিত রয়েছে।
এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বরিশাল ক্যাম্পাসের নিয়মিত বাস শিডিউল বন্ধ রেখে কর্মী সম্মেলনে বাস নিয়ে আসার অভিযোগ উঠেছে। এতে বরিশাল ক্যাম্পাস থেকে বরিশাল শহরগামী শতাধিক নিয়মিত শিক্ষার্থী ভোগান্তির শিকার হয়েছেন।
কর্মী সম্মেলনের সামনের সারিতে অতীতে ছাত্রলীগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কিছু সক্রিয় কর্মীকে উপস্থিত থাকতে দেখা গেছে বলেও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।
২৩-২৪ সেশনের খাদ্য ও পুষ্টিবিজ্ঞান অনুষদের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের তথাকথিত ছাত্রদল নেতারা যে ধরনের আচরণ করেছে, তা যেন বিগত সময়ের ফ্যাসিস্ট ছাত্রলীগের প্রতিরূপ। আমরা এ বিষয়ে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।”
ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী সামাদ নকিব বলেন, “নামমাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ রেখে প্রশাসনের ছত্রছায়ায় ছাত্রদলের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। গণরুমে ঢুকে যেভাবে ছাত্রদল নেতারা উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করেছে, তা বর্তমান পবিপ্রবির জন্য অশনিসংকেত।”
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. ইকতিয়ার উদ্দীন এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,”ছাত্রদলের কর্মী সম্মেলন সম্পর্কে উপাচার্য, উপ-উপাচার্য এবং প্রক্টর যথাযথভাবে অবগত রয়েছেন। আমি শুধু উপাচার্যের আদেশ বাস্তবায়ন করি, এর বাইরে আমার কোনো ক্ষমতা নেই।”
কিন্তু এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আবুল বাশার খানকে জিজ্ঞেস করলে তিনি ছাত্রদলের কর্মসূচির বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে মন্তব্য করেন।
বিষয়টি নিয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. কাজী রফিকুল ইসলাম এর কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ থাকা সত্ত্বেও কীভাবে টিএসসি কনফারেন্স রুমে ছাত্রদলের কর্মীসভা হয়েছে, সে বিষয়ে আমি জানি না। তবে আমি প্রক্টর ও ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টাকে ঘটনাটি খতিয়ে দেখতে বলেছি।” তিনি আরও বলেন, “এখন পর্যন্ত ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ রয়েছে।”
উল্লেখ্য যে, গত ১৩ আগস্ট শিক্ষার্থীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে তৎকালীন রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. এস এম হেমায়েত জাহান স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে পবিপ্রবি থেকে সকল ধরনের রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়।