আজ শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:৫৫ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিনিধি মৌলভীবাজার
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল ফুসকুড়ি চা বাগানে শ্রম কল্যাণ কেন্দ্রের অনিয়ম দূনীতির অভিযোগ উঠেছে। এখানে নেই কোন ডাক্তার, ১২ টি পদের মধ্যে কর্মরত মাত্র ২ জন কর্মচারী। এর মধ্যে একজন ডাক্তারের পদ চলছে অতিরিক্ত ডাক্তার দিয়ে। সংগঠক কবির আহমদের উপর স্থানীয়দের অভিযোগের শেষ নেই। শ্রম কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের শ্রম অধিদপ্তরের অধিনে ফুসকুড়ি চা বাগানে শ্রমিকদের চিকিৎসা, বিনিদোন করার জন্য স্থাপন করা হয় এই শ্রম কল্যাণ কেন্দ্রটি। কিন্তু বাস্তবে চা শ্রমিকদের কোন কাজে আসছেনা কেন্দ্রটি। গরীব চা শ্রমিক তাদের পরিবারের লোকজন আসে চিকিৎসা নিতে। এখানে একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পদ আছে। স্থায়ী কোন ডাক্তার নেই ।
অতিরিক্ত দায়ীত্ব পালন করছেন শ্রীমঙ্গল শ্রম অধিদপ্তরের ডাক্তার নিবাস চন্দ্র পাল। সাপ্তাহে ২ দিন এসে রোগী দেখার কথা থাকলেও এপর্যন্ত তার দেখা পায়নি কেউ। তিনি ১৯৯৯ সাল থেকে দীর্ঘ দিন এই শ্রম কল্যাণ কেন্দের ডাক্তার ছিলেন। বর্তমানে একজন ফার্মাসিষ্ট নিবাস চন্দ্র পাল প্রতিদিন রোগী দেখেন। সংগঠক কবির আহমদ কোয়ার্টারে থাকে বেতন বোনাস সহ সকল সুবিধা নিয়েও নিয়মিত অফিস খোলেননা। চা বাগানের ছেলে মেয়েরা ইনডোর খেলাধুলা বা বই পড়ার কোন সুজুগ পাচ্ছেন না।
ফুসকুড়ি বাগানের পঞ্চায়েত সদস্য জয়ন্ত বুনার্জি, চা শ্রমিক বিজয় পাল, রাজিব বুনার্জি, পিংকু বুনার্জি, নিপেন বুনার্জি, মনি বুনর্জি, রিংন্কু বুনার্জি, মো: জরিন আহমদ, লিটন দাশ বলেন, আমরা চা শ্রমিক নিন্ম আয়ের মানুষ। ভাল ডাক্তার দেখানোর সামর্থ আমাদের নেই। শ্রম কল্যাণ কেন্দ্রে আসি শিশু সন্তান নিয়ে। ডাক্তার পাওয়া যায় না। ফার্মাসিস্ট নিবাস চন্দ্র পাল আমাদের ঔষধ দেন। সর্ব রোগের ঔষধ হিস্ট্রাসিন, প্যারাসিটামল, মেট্রিল আর কিছু এন্টিবায়োটিক। তাও এন্টিবায়োটিকের কোন মাত্রা নেই। শিশুদের ক্ষেত্রে যা, বড়দের ক্ষেত্রেও তা।
এছাড়াও সংগঠক কবির আহমদ তার অফিস কখনো খোলেন কেউ বলতে পারবেনা। যার কারনে খেলা দোলা কিছু করা যায়না। এমনকি বই পড়ার সুজুগ থাকলেও শিক্ষিত ছেলে মেয়ে বই পড়তে পারেনা। কবির আহমদ এর ২ টি লেবু বাগান করেছে। সে সব সময় তার লেবু বাগানে থাকে। এছাড়াো শ্রম কল্যাণ কেন্দ্রের কোয়ার্টারে থাকার কারনে শ্রম কল্যান কেন্দ্রের বড় বড় গাছ গোপনে সে বিক্রি করে দেয়। তার উপর অভিযোগের শেষ নেই।
বাগান পঞ্চায়েত কমিটর সভাপতি সুনিল তাতীঁ বলেন, ডাক্তার বাবু নিবাস চন্দ্র পালের দেখা আমরা পাইনা। শুনেছি তিনি শ্রীমঙ্গলে শ্রম অধিদপ্তর অফিসে বসেন। এখানে তিনি অতিরিক্ত দায়ীত্বে আছেন। এছাড়াও শ্রীমঙ্গল তার একটি পলিক্লিনিক পরিচালনা করেন। ফার্মাসিষ্ট নিবাস চন্দ্র পাল রোগী দেখেন। ঔষধের ৩৫/৩৬ টি আইটেম কথা থাকলেও রোগীকে শুনতে হয় ঔষধ নাই। সংগঠক কবির আহমদ কোয়ার্টারে থাকলেও অফিস খোলেননা। সব সময় তার লেবু বাগানে সময় দেন।
এব্যাপারে সংগঠক কবির আহমদ বলেন, অফিস আমি খোলা রাখিনা কথাটি সঠিক নয়। আর লেবু বাগান করা দোষের নয়। এটা আমার ব্যক্তিগত বিষয়। তা হলে অফিসে সময় পাওয়া যায়না কেন? প্রশ্ন করলে কোন উত্তর দিতে পরেননি।
ডা: নিবাস চন্দ্র পাল বলেন, আমার প্রথম পোষ্টিং ফুসকুড়ি শ্রম কল্যাণ কেন্দ্রে ছিল। আর আমি ফুসকুড়ি শ্রম কল্যাণ কেন্দ্র যাইনা অভিযোগটি ঠিক নয়। বর্তমানে আমি অতিরিক্ত দায়ীত্বে আছি। সাপ্তাহে ২ দিন সেখানে যাই। আমাকে এই দায়ীত্ব থেকে সারানোর জন্য বারবার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অনুরুধ করেছি। আর কেন্দ্রে ১২ টি পদের বিপরীতে লোক আছে ২ জন। এই শুন্য পদে লোক নিয়োগের জন্য বারবার লিখেছি। কিন্তু কর্তৃপক্ষ নিয়োগ না দিলে কি করবো। সংগঠক কবির আহমদের বিষয় আমি অভিযোগ পাইনি। এখন বিষয়টি খতিয়ে দেখবো।
এ ব্যপারে শ্রীমঙ্গল বিভাগীয় শ্রম অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক নাহিদুল ইসলাম এর সাথে মোবাইল ফোনে বারবার যোগাযোগ করলে ফোন রিসিভ করেননি।