আজ শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:৩১ অপরাহ্ন
রংপুর প্রতিনিধি:
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২০১১-২০১২ অর্থবছরে প্রথমবারের মতো কার্ডিওলজি বিভাগে চালু করা হয়েছিল ক্যাথল্যাব। শুরুতে ভালোভাবে চললেও যান্ত্রিক নানা ট্রুটির কারণে বন্ধ ছিল ক্যাথল্যাবটি।
এতে ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছিল স্বল্প আয়ের রোগীদের।
কিন্তু এই ভোগান্তির পালা শেষ হতে চলেছে মধ্যবিত্ত ও স্বল্প আয়ের মানুষদের আর পড়তে হবে না কোন ভোগান্তিতে স্বল্প টাকায় মিলবে হার্টের এনজিওগ্রাম ও হার্টের রক্তনালীতে স্টেট রিং বসানো।
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পুরনো একটি এনজিওগ্রাম মেশিন দিয়ে চালু করা হয়েছে বন্ধ হওয়া ক্যাথল্যাবটি।
এতে স্বল্প আয়ের হৃদরোগীদের চিকিৎসা ব্যয় ব্যাপকহারে কমছে। যা স্বল্প আয় ও মধ্যবিত্তদের জন্য স্বস্তি জনক।
পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার আব্দুল মজিদ (৫০)
তিনি দীর্ঘদিন যাবত টাকার অভাবে হার্টের রিং
বসাতে পারছিলেন না।
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ক্যাথল্যাবটি চালু হওয়ার পরে ফেব্রুয়ারি মাসে সফল চিকিৎসায় এখন সুস্থ আছেন আব্দুল মজিদ।
গাইবান্ধার পলাশবাড়ির আব্দুল জব্বার (৬০)
দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগে আক্রান্ত ব্যয়বহুল খরচের কারণে করাতে পারছিলেন না চিকিৎসা কিন্তু রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ক্যাথলাব স্থাপন করার মাধ্যমে স্বল্প ব্যয়ে সফল চিকিৎসায়
তিনিও এখন সুস্থ আছেন।
হার্ট রিং বসাতে বাইরের হাসপাতালগুলোতে প্রতিটি রিং কিনতে প্রকারভেদে খরচ লাগে ৭০হাজার থেকে দেড় লাখ টাকা। রিং বসাতে সরকারি হাসপাতালে খরচ হয় মাত্র ২ হাজার টাকা। যা স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য অত্যন্ত উপকারী। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এমন কাজকে সাধুবাদ ও ধন্যবাদ জানায় সাধারণ মানুষ।
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের সিনিয়র কনসালট্যান্ট ও দেশের স্বনামধন্য ও বিশেষজ্ঞ ডা. মো. মাহবুবুর রহমান জানিয়েছেন, আমরা প্রায় ছয় বছর ধরে পরিশ্রমের মাধ্যমে চেষ্টা চালিয়ে সাধারণ মানুষের উপকার করার জন্য কার্ডিওলজি বিভাগের ক্যাথল্যাব পুনরায় সচল করেছি। হার্টের সর্বোচ্চ এবং আধুনিক চিকিৎসা বলতে যা বোঝায় তাএই ক্যাথল্যাবে দেয়া সম্ভব। এখন রংপুরের হৃদরোগীদের অধিক ব্যয়ে আর ঢাকা অথবা দেশের বাইরে যাওয়ার প্রয়োজন নেই এবং স্বল্প আয়ের মানুষদের আর ভোগান্তিতে পড়তে হবেনা। কম খরচে এনজিওগ্রাম, রিং বসানো এবং পেসমেকার স্থাপনের মতো গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসা রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দেওয়া হচ্ছে। বর্তমানে একটি মাত্র পুরনো এনজিওগ্রাম মেশিন দিয়ে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এছাড়া প্রতিদিন ক্যাথল্যাব চালু রাখার সক্ষমতা থাকলেও একজন টেকনোলজিস্ট দিয়ে সপ্তাহে মাত্র দুদিন চিকিৎসা কার্যক্রম চালানো হচ্ছে বলে জানান বিশেষজ্ঞ ও জনপ্রিয় ডা. মাহবুবুর রহমান। তিনি বলেন, ক্যাথল্যাব সবসময় সচল রাখার জন্য দুটি মেশিন এবং দুজন টেকনোলজিস্ট প্রয়োজন। যাতে একটি মেশিন খারাপ হলে অন্যটি দিয়ে কার্যক্রম সচল রাখা সম্ভব হয়।
সাধারণ মানুষের উপকার ও স্বল্প আয়ের মানুষের মাঝে স্বল্প টাকায় অত্যন্ত দক্ষতার সাথে সেবা দেওয়ায় প্রশংসায় পঞ্চমুখ ডাঃ মাহাবুবুর রহমান।
তার চিকিৎসায় সাহায্য পেয়েছে দেশের গরিব ও অসহায় রোগীরা।