আজ শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০:০১ অপরাহ্ন

Logo
সাকিব দেশে ফিরতে না পারায় বোর্ড জড়িত নয় : বিসিবি সভাপতি

সাকিব দেশে ফিরতে না পারায় বোর্ড জড়িত নয় : বিসিবি সভাপতি

খেলা ডেস্ক :-

বিদায়ী টেস্ট খেলতে সাকিব আল হাসান দেশে ফিরতে না পারায় বোর্ডের কোনো ভূমিকা ছিল না বলে জানালেন বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ। তার দাবি, ব্যক্তিগতভাবে তিনি চেষ্টার কমতি রাখেননি, কিন্তু পুরো ব্যাপারটি ছিল বোর্ডের আওতার বাইরে। সামনে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের জন্য সাকিব এখনও ‘অ্যাভেইলঅ্যাবল’ আছেন বলেই মনে করেন বোর্ড প্রধান।

দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে চলতি টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচ দিয়ে টেস্ট ক্যারিয়ারের ইতি টানতে চেয়েছিলেন সাকিব। বাংলাদেশের স্কোয়াডেও রাখা হয়েছিল তাকে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে তিনি দেশে ফেরার পথে ছিলেন। কিন্তু তার ফেরাকে কেন্দ্র করে একটি পক্ষ আন্দোলন ও নানা কর্মসূচি পালন করে আসছিল বেশ কয়েকদিন ধরেই। পরে সাকিবের ভক্তরাও পাল্টা আন্দোলন শুরু করে। মিরপুর স্টেডিয়ামের আশেপাশে টানা কয়েকদিন পরিস্থিতি ছিল প্রচণ্ড উত্তপ্ত।

সাকিব পরে আর দেশে ফিরতে পারেননি। দুবাই থেকেই ফিরে যেতে হয় তাকে।

দেশের সর্বকালের সেরা ক্রিকেটারের ফিরতে না পারা নিয়ে এতদিন বিসিবির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলা হয়নি। বোর্ড কর্তাদের কেউ কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। দুবাইয়ে আইসিসি সভা থেকে ফিরে অবশেষে এই প্রসঙ্গে প্রথমবার মুখ খুললেন ফারুক আহমেদ।

বিসিবি সভার আগে বুধবার দুপুরে মিরপুরে বোর্ড সভাপতি বললেন, সাকিবের ফিরতে না পারার ঘটনায় তাদের কিছু করার ছিল না।

“আপনি যেটা বললেন যে, শেষ টেস্ট খেলতে (ফিরতে পারেনি)… একেবারেই আমরা কোনোভাবে জড়িত নই এই ব্যাপারটায়। এটা হলো আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সরকার ও সাকিব আল হাসান (তাদের ব্যাপার)..। এখানে আমাদের পুরোপুরি অক্সিলারি একটা পার্ট নেওয়ার কথা ছিল। আমি ব্যক্তিগতভাবে আপনাদের সামনে যত কথাই বলি, আমি আমার সর্বোচ্চটা দিয়ে চেষ্টা করেছি যাতে সাকিব দেশ থেকে অবসরে যেতে পারে। আমার চেষ্টা আমি করেছি।”

“কিন্তু সাকিব এখন শুধু একজন খেলোয়াড় নয়। তার একটা পরিচয় আছে যে, গত সরকারের একজন এমপি ছিল এবং কিছু সেন্টিমেন্ট আছে (তাকে নিয়ে)। সব মিলিয়ে সরকালের দৃষ্টিকোণ ও ক্রিকেট বোর্ডের দৃষ্টিকোণ তো এক নয়।”

দুবাইয়ে যাত্রবিরতিতে থাকার সময় সাকিব বলেছিলেন, “দেশে ফেরার কথা ছিল… কিন্তু এখন হয়তো ফিরতে পারব না সিকিউরিটি ইস্যুর জন্য, আমার নিজের নিরাপত্তার জন্যই…।”

ফারুক আহমেদ বললেন, সাকিব দেশে ফিরলে তার নিরাপত্তার ব্যাপারটি বোর্ড নিশ্চিত করত। কিন্তু তার দেশে ফিরতে না পারার ক্ষেত্রে বোর্ড অসহায়।

“আমি সাবেক ক্রিকেটার হিসেবে মনে করেছি যে, একটা ছেলে ১৭ বছর ক্রিকেট খেলেছে, সে একজন ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর, বাংলাদেশের জন্য অনেক করেছে, এজন্য আম মনে করেছি, এটা (দেশ থেকে অবসর) হলে ভালো হতো। কিন্তু সঙ্গে অন্য জিনিসগুলোও তো দেখতে হবে আপনার। ওই জিনিসগুলো মিলিয়ে শেষ মুহূর্তে সে আসতে পারেনি, এটার ব্যাপারে বোর্ডের কিছু করার ছিল না।”

“এটা পুরোপুরি আইনগত ব্যাপার এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এতে জড়িত আছে। সুতরাং এটা সাকিব ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যাপার ছিল। বোর্ড এটার অংশ ছিল না। সে এলে বোর্ডের যতটুকু ক্ষমতা আমরা তাকে নিরাপত্তা দেওয়ার চেষ্টা করতাম। যেহেতু সে আসেনি, এটা নিয়ে আর কথা বলে লাভ নেই।”

সাকিবের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের ভবিষ্যৎ এখন অনিশ্চয়তার সুতোয় ঝুলছে। টেস্ট থেকে বিদায়ের ঘোষণা দেওয়ার সময় ৩৭ বছর বয়সী এই অলরাউন্ডার বলেছিলেন, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি পর্যন্ত ওয়ানডে ক্রিকেটে খেলে যেতে যান তিনি। ফেব্রুয়ারি-মার্চে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগে বাংলাদেশের আর দুটি ওয়ানডে সিরিজ আছে। সামনেই সংযুক্ত আরব আমিরাতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচের সিরিজ, এরপর ডিসেম্বরে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে তিন ম্যাচের সিরিজ।

এই সিরিজগুলো খেলতে তার দেশে ফেরার ব্যাপার নেই। তবে এভাবে দেশের বাইরে থেকে তাকে খেলানো হবে কি না বা সরকারের পক্ষ থেকে এখানে কোনো নির্দেশনা আছে কি না, এসব নিয়েও নানা প্রশ্ন আছে।

আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজে সাকিব থাকছেন কি না, এই প্রশ্নে বোর্ড সভাপতি বললেন, “সাকিব আল হাসানের ব্যাপারটা… এখনও যেহেতু দল দেয়নি (ঘোষণা হয়নি), আমার মনে হয় অ্যাভেইলঅ্যাবল আছে সে।”

আফগানদের বিপক্ষে শারজাহতে তিন ম্যাচের সিরিজটি শুরু আগামী বুধবার।

Please Share This Post in Your Social Media

All rights reserved © 2024 ourdailybangladesh.com