আজ রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ০১:০০ পূর্বাহ্ন
এইচ এম বাবলু বাউফল প্রতিনিধি:
সংসারের স্বচ্ছলতা ফিরেপেতে ও সন্তানের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য ৫লাখ টাকা চুক্তিতে ভালো বেতনে চাকরি দেওয়ার কথা বলে মো. সাগর
নামে এক যুবককে মালয়েশিয়া নিয়ে নির্যাতন ও মুক্তিপণ দাবির
অভিযোগ পাওয়া গেছে। জিম্মি সাগর পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার
চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের দিয়ারা কচুয়া গ্রামের ইদ্রিস ফরাজির ছেলে। দেড়
বছর আগে দাশপাড়া গ্রামের বশার হাওলাদারের ছেলে প্রবাসি মো.
আমিন হাওলাদার তাকে (সাগর) মালয়েশিয়া নিয়ে যান। তারপর থেকে
সাগরের ওপর নির্যাতন শুরু করা হয়।
ছেলেকে ফিরে পেতে এবং দালাল চক্রের সদস্যদের শাস্তির দাবি করে আজ
(রবিবার) বাউফল থানা লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন মালয়েশিয়ায়
জিম্মি সাগরের মা বিউটি বেগম।
সাগর মা বিউটি বেগম অভিযোগ করে বলেন, আমার ছোট ভাই
সোহরাব প্যাদা তার শ্যালক আমিন হাওলাদার দীর্ঘদিন ধরে মালয়েশিয়া
থাকেন। সে মালয়েশিয়ায় অনেক লোক নিয়েছেন। আমার ছেলেকেও ভালো
বেতনে মালয়েশিয়ায় চাকরির প্রলোভন দেখায় আমার ভাই সোহরাব।
বিনিময় তার শ্যালককে দিতে হবে ৫ লাখ টাকা। ধারদেনা করে টাকা
জোগাড় করি। ভাইর শ্যালক আমিন দেড় বছর আগে আমার ছেলেকে
মালয়েশিয়া নিয়ে যান। বিদেশ নিয়ে ভালো চাকরি না দিয়ে উল্টো
আমার ছেলে জিম্মি করে নির্যাতন শুরু করে আমিন। ছেলের মুক্তির জন্য
সাড়ে তিন লাখ টাকা দাবি করে। টাকা না দেওয়ায় ছেলের সাথে
আমাদের কোনো যোগাযোগ করতে দিচ্ছেন না। কয়েকদিন আগে
আমাকে ফোন দিয়ে ছেলেকে মারধর করেন। ছেলের কান্নায় আমার
বুকটা ফেটে গেছে। আর এসব কিছুর সাথে আমার ভাই সোহরাব
জড়িত। সোহরাবের বুদ্ধি পরামর্শে তার শ্যালক আমার ছেলেকে জিম্মি
করে নির্যাতন করতেছেন।
ছেলেকে ফিরে পেতে আকুতি জানিয়ে বিউটি বলেন, ভালো বেতনের
জন্য আমার ছেলেকে বিদেশ পাঠিয়েছি। ভাবছি ছেলের বেতনের টাকায়অসুস্থ্য স্বামীকে নিয়ে বাকি জীবন সুখে থাকব। সব স্বপ্ন শেষ।
আমার ভাই ও তার শ্যালক আমার ছেলেকে বিদেশ নিয়ে নির্যাতন করতেছে।
আমাদের সাথে কথাও বলতে দিচ্ছে না। ছেলেকে ফিরিয়ে আনতে
সরকারের কাছে সহযোগিতা ও দোষিদের বিচার দাবি করেছেন বিউটি
বেগম।
জিম্মি সাগরের মামা মো. ইউসুফ বলেন, দালাল আমিন প্রথম বার
২০২৩ সালে অবৈধভাবে মালয়েশিয়া নেওয়ার সময় বিদেশ থাইল্যান্ডে
আটক হন আমার ভাগিনা সাগর। এক মাস ১৭দিন কারাভোগ করার পর
তাকে মুক্তি দিয়ে দেশে পাঠিয়ে দেন থাইল্যান্ড সরকার। পরে বৈধ ভিসায়
তাকে মালয়েশিয়া নেন । মালয়েশিয়া নিয়ে আমার ভাগিনাকে
নির্যাতন শুরু করেন আমিন। মুক্তিপণ চায়।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে আমিন হাওলাদারের হোয়াটসঅ্যাপে
একাধিক বার ফোন করা হলেও তিনি কল রিসিভি করেনি। সোহরাব প্যাদা
বলেন, আমার শ্যালকের মাধ্যমে বিদেশে পাঠিয়েছি। বিদেশ পাঠাতে
আমার অনেক টাকা খরচ হয়েছে। সেই টাকা এখনো পরিশোধ করেনি।
আর নির্যাতনের বিষয়ে কিছু জানি না।
এবিষয়ে বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল হোসেন
বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া
হবে।