আজ শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ১১:১৬ অপরাহ্ন
মুহাম্মদ কাইসার হামিদ, কুলিয়ারচর (কিশোরগঞ্জ):
কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন নিয়মিত অফিস না করায় সেবা গ্রহীতারা সেবা পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছে প্রতিনিয়ত। এ বিষয়ে গত বছরের নভেম্বর মাসের শুরুতে জাতীয় দৈনিক, স্থানীয় দৈনিক, সাপ্তাহিক পত্রিকাসহ অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও নিউজ ভার্সনে একাধিক সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সাবিহা ফাতেমাতুজ্-জোহরা উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেনকে লিখিতভাবে সতর্ককরণ চিঠি দিয়ে নিয়মিত অফিস করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। ইউএনও’র সতর্ককরণ চিঠিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে এখনও নিয়মিত অফিস না করার অভিযোগ উঠেছে ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয় জাতীয় অনুষ্ঠান অমর একুশে ফেব্রুয়ারিতেও তিনি ছিলেন অনুপস্থিত। কেউ কোন প্রকার পদক্ষেপ না নেওয়ায় তিনি প্রায়ই অফিস ফাঁকি দিয়ে সময় কাটাচ্ছেন তার বাসা-বাড়িতে।
সরেজমিনে, আজ ২মার্চ রোববার অফিস টাইম সকাল ৯টা থেকে বিকাল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তাকে অফিসে দেখতে পাওয়া যায়নি। সকাল ৯টা থেকে বিকাল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত ওই কর্মকর্তার অফিস রুমের দরজা খোলা থাকলেও ওই কর্মকর্তাসহ কেউ ওই রুমে ছিলেননা। বিকাল ২টা ৩৪ মিনিটের সময় ওই অফিসে গিয়ে দেখা যায় হাজিরা খাতায় ওই যুব উন্নয়ন কর্মকর্তার উপস্থিতির টি স্বাক্ষর নেই।
জানা যায়, তিনি উপজেলা অফিসার্স কোয়ার্টারে মাঝে মধ্যে থাকলেও প্রায় সময় নারায়ণগঞ্জ বাসা থেকে তার স্বাধীন মতো এসে অফিস করে চলে যান। এমনও দেখা যায় প্রায় সময় তিনি অফিসে আসেননা। আসলেও অফিসে থাকেননা। সপ্তাহে তিনদিন অফিস করতেন। স্টাফদের নিকট জানতে চাইলে তারা বিভিন্ন তালবাহানা দেখিয়ে বলেন স্যার বাহিরে আছেন। আজ হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেননি।
গত বছরের ৬ অক্টোবর পৌরসভা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশের মাধ্যমে পৌরসভার প্রশাসকের কর্ম সম্পাদনে সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে ৯টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর এর ক্ষমতা প্রয়োগ ও দায়িত্ব পালনের জন্য উপজেলার ৬টি দপ্তরের কর্মকর্তাদের আনুষ্ঠানিক ভাবে পৌরসভার কাউন্সিলর হিসেবে দায়িত্ব প্রদান করেন। এর মধ্যে পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের নোয়াগাঁও, একরামপুর ও রায়েরচর মহল্লার দায়িত্ব পান উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন। কিন্তু তিনি প্রায় সময় অফিসে অনুপস্থিত থাকায় সেবা গ্রহীতারা সেবা পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন প্রতিনিয়ত। পৌরসভার স্টাফ এসেও তাকে অফিসে পাননি।
উপজেলা যুবউন্নয়ন কর্মকর্তা অনুপস্থিত থাকার বিষয়ে প্রথমে অফিসের কোন স্টাফ কোন কিছু বলতে না চাইলেও পরে কয়েকটি প্রশ্নের জবাবে উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা কার্যালয়ের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর আব্দুল মজিদ ও সহকারী উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা আলতাফ হোসেন মোল্লা বলেন, স্যার আজ অফিসে আসেননি। তিনি ছুটিতে আছেন কিনা তাও জানিনা।
আজ ২মার্চ রোববার বিকাল ৩টা ০৩ মিনিটের সময় মোবাইল ফোনে অনুপস্থিত থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন বলেন, তিনি ঢাকায় আছেন। তার মা অসুস্থ তাই আজ আসতে পারেননি। আগামীকাল এসে অফিস করবেন তিনি।
এব্যাপাবে কুলিয়ারচর পৌরসভা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাবিহা ফাতেমাতুজ-জোহরা’র সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা অনুপস্থিত থাকার কথা আমি জানিনা। আমি নিজেই ছুটিতে আছি।
এব্যাপারে আজ ২মার্চ রোববার বিকাল ২টা ৩৪ মিনিটের সময় কিশোরগঞ্জ জেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক রফিকুল ইসলাম শামীম এর সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, কুলিয়ারচর উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা আজ কোথায় আছে আমি জানিনা। আমার নিকট ছুটি নেননি তিনি। এছাড়া আজ আমি মেইলও চেক করিনি। তিনি কোন ছুটির আবেদন করেছেন কিনা তাও অবগত নই। অফিসে অনুপস্থিত থাকার বিষয়টি খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।