আজ শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৩৫ অপরাহ্ন
ডেস্ক নিউজ :-
পবিত্র রমজানে অতিপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যের আমদানি নিয়ে তৈরি হয়েছে শঙ্কা। আমদানিকারকরা ব্যাংক থেকে প্রত্যাশিত এলসি (ঋণপত্র) খুলতে না পারায় এবং কিছু কিছু ব্যাংকের ক্রেডিট লাইন খারাপ হওয়ায় এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গেছে। যদিও রমজান সামনে রেখে ১১ ধরনের অতিপ্রয়োজনীয় পণ্যের আমদানি সহজ করতে উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ আড়তদার সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সোলায়মান বাদশা বলেন, সাধারণত রমজান শুরু হওয়ার চার-পাঁচ মাস আগে থেকেই অতিপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানির প্রক্রিয়া শুরু করেন আমদানিকারকরা। ব্যাংকগুলোর নানান সমস্যার কারণে এখনো প্রত্যাশিত এলসি খুলতে পারছেন না ব্যবসায়ীরা। এটা যদি অব্যাহত থাকে, তাহলে রমজানে অতিপ্রয়োজনীয় পণ্যের সংকট সৃষ্টি হবে। তাই সরকারকে এখনই এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে হবে।জানা যায়, রমজান শুরুর কয়েক মাস আগে থেকেই অতিপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি শুরু করেন দেশের অন্যতম পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জের আমদানিকারকরা। কিন্তু বর্তমানে ১১টি ব্যাংকের ক্রেডিট লাইন খারাপ হওয়ার কারণে সেসব ব্যাংক থেকে এলসি খুলতে পারছেন না আমদানিকারকরা। এ ছাড়া অন্য ব্যাংকগুলো থেকেও খোলা যাচ্ছে না প্রত্যাশিত এলসি। তাই রমজানের অতিপ্রয়োজনীয় পণ্যের আমদানি নিয়ে তৈরি হয়েছে শঙ্কা। তবে রমজান সামনে রেখে ১১ ধরনের অতিপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি সহজ করে দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখতে বিশেষ সুবিধা দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
চাল, গম, পিঁয়াজ, ডাল, ভোজ্য তেল, চিনি, ডিম, ছোলা, মটর, মসলা ও খেজুর আমদানির জন্য এলসি খোলার ক্ষেত্রে নগদ মার্জিনের হার ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে ন্যূনতম পর্যায়ে রাখার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া অভ্যন্তরীণ বাজারে এসব পণ্যের সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য এলসি খুলতে অগ্রাধিকার দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, দেশে আমদানির গতি নিম্নমুখী। গত বছরের তুলনায় চলতি অর্থবছরের প্রথম ত্রৈমাসিক (জুলাই-সেপ্টেম্বর) ঋণপত্র খোলার পরিমাণ কমেছে ৭ শতাংশ। নিষ্পত্তি কমেছে ২.৫ শতাংশ। এনবিআরের পরিসংখ্যানেও মিলেছে কিছু কিছু পণ্য আমদানির নিম্নমুখীর চিত্র। গত বছরের জুলাই থেকে অক্টোবরে ৫ লাখ ২৩ হাজার ৬৯৩ মেট্রিক টন পরিশোধিত পাম তেল আমদানি হলেও চলতি বছর একই সময়ে তা কমে আমদানি হয়েছে ৪ লাখ ৩৪ হাজার ১৬৮ মেট্রিক টন। ছোলা ১১ হাজার ৩৬৬ মেট্রিক টন থেকে ২ হাজার ৬৮২ মেট্রিক টনে এবং চিনি ১ লাখ ১ হাজার ১৪৩ মেট্রিক টন থেকে ৮১ হাজার ৬৮৮ মেট্রিক টনে নেমেছে। তবে কিছু কিছু পণ্যের আমদানি বেড়েছে। এর মধ্যে সয়াবিন তেলের আমদানি ১ লাখ ৬৪ হাজার ৯৮৯ মেট্রিক টন থেকে বেড়ে ২ লাখ ২৮ হাজার ১৬৫ মেট্রিক টনে এবং মসুর ডালের আমদানি ৬৫ হাজার ৯৯৬ মেট্রিক টন থেকে ১ লাখ ৮৯ হাজার ৫৬০ মেট্রিক টনে পৌঁছেছে। খাতুনগঞ্জে রমজানের অতিপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্য আমদানি করেন এমন কয়েকজনের সঙ্গে কথা হয় বাংলাদেশ প্রতিদিনের। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা বলেন, বিগত সময়ে রমজান শুরু হওয়ার পাঁচ থেকে ছয় মাস আগেই রমজানের অতিপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানির প্রক্রিয়া শুরু হয়। গতবারের মতো এবারও ব্যাংকে ডলার সংকট এবং প্রত্যাশিত এলসি খুলতে পারছেন না ব্যবসায়ীরা। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যেই রমজানের অতিপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি আরও সহজ করতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।