আজ শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:০০ পূর্বাহ্ন
ডেস্ক নিউজ :-
পটুয়াখালীর বাউফলে শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে পূজামন্ডপে সরকারি বরাদ্দের চাল আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে।
সূত্রে জানা গেছে, হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দূর্গাপূজা উপলক্ষে সরকারের পক্ষ থেকে উপজেলার ৬৫টি মন্ডপের জন্য ৫শত কেজি করে মোট সাড়ে ৩২টন চাল বরাদ্ধ দেয় সরকার। ৬৫টি পূজা মন্ডপের তালিকা প্রনয়ণ করেন উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটি। কোন ধরনের যাচাই বাছাই না করে প্রতিটি মন্ডপের জন্য সমান বরাদ্দ অনুমোদন দেন উপজেলা প্রশাসন ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা।
কিন্তু ৬৫টি পূজা মন্ডপের মধ্যে ৪টি মন্ডপে কোন ধরনের পূজা উদযাপন করা হয়নি। বেনামে সরকারী বরাদ্দের টাকা অত্মসাতের জন্য ওই মন্ডপের নাম দেখিয়ে টাকা উত্তোলন করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
বাউফল সদর ইউনিয়নের দক্ষিণ গোসিংগা গ্রামের মিস্ত্রি বাড়ির পূজা মন্ডপে বিচিত্র সরকার নামের এক ব্যক্তিকে সভাপতি দেখানো হয়েছে ওই তালিকায়। অথচ ওই ব্যক্তি মারা গেছেন প্রায় ৩ বছর আগে।
আদাবাড়িয় ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের মাধবপুর গ্রামের অটল হাওলাদার বাড়ি দূর্গাপুজা মন্ডপ চলতি বছরসহ বিগত তিন বছর যাবৎ পূজা উৎযাজন হয়নি। অথচ ওই বরাদ্দের তালিকায় নাম রয়েছে।
কালিশুরী ইউনিয়নের সিংহেরাকাঠি গ্রামের মিলন মন্দির এবং সিংহেরাকাঠি ব্যপারীবাড়ি নামে দুটি মন্দিরের নামে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানাগেছে,ওই দুটি মন্দির একই বাড়িতে অবস্থিত বলে নিশ্চিত করেছেন ওই পূজামন্ডপের সভাপতি সজল হাওলাদার।
অভিযোগ রয়েছে পূজামন্ডপে বরাদ্দের চাল নিতে খরচ বাবদ উপজেলা কমিটির সভাপতি ও সাধারন সম্পাদককে প্রতিটি পূজা মন্ডপের কমিটিকে গুনতে হয়েছে ১ থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত।
এছারাও বাউফলে ৯টি মন্ডপে ঘটপূজার নামে একই ভাবে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। ধর্মীয় আচার অনুসারে ৩টি মাটির ঘট (পাত্র), দুটি কলা গাছ, আম সরাত (পাতা), বেলপাতা, দুর্বা (ঘাস), তুলসী পাতা, ফলপ্রসাদ ও একটি ব্যানারের সমন্বয়ে ঘট পূজায় অনুষ্ঠিত হয় থাকে। এ ধরনের পূজায় একজন ব্রাহ্মণ মন্ত্রপাঠ করান। ব্রাহ্মন মুকিন্দ লালের দেয়া তথ্যমতে সর্বসাকুল্যে এই পূজায় খরচ হয় ৩হাজার টাকা। এর বিপরিতের বরাদ্দের পরিমাণ ৫শত কেজি চাল। যার বাজার মূল্য ২১-২২ হাজার টাকা।
সরেজমিন অনুসন্ধানে মাত্র ২টি ঘটপূজার সন্ধান পাওয়া গেছে। এবিষয়ে দক্ষিণ গোসিংগা মিস্ত্রিবাড়ি পূজা মন্ডপের বিচিত্র সরকারের পুত্রবধু কল্পনা রানী বলেন, গত ৩ বছর আগে তার চাচা শশুর বিচিত্র সরকার মৃত্যুবরণ করেছেন। গত ২বছর ধরে এই পূজা মন্ডপে উৎসব পালিত হয় না। পূজার অনুদান পেয়েছেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, মৃত্যু ব্যক্তি কিভাবে অনুদান নিবেন। মাধবপুর অটল হালদার বাড়ি পূজা মন্ডপের যুদিষ্টি হালদার বলেন, গত ৩বছর তাদের বাড়িতে পূজা উৎযাপন হচ্ছে না। সরকারী বরাদ্দের চাল সম্পর্কে তারা কিছুই জানেন না।
সিংহেরাকাঠি ব্যাপারী বাড়ি দূর্গা মন্ডপ ও বাহেরচর সিংহেরাকাঠি মিলন মন্দির একই বাড়ির নিশ্চিত করে বিনোদ হালদার বলেন, এ মন্দিরে এবছর পূজা উদযাপন করা হয়নি।
পূজা উদযাপন কমিটির বাউফল উপজেলা সভাপতি বাবু সঞ্জিত কুমার ওরফে সনু সাহা বলেন, ৫৭টি প্রতিমা ও ৮টি ঘটপূজাসহ মোট ৬৫টি মন্ডপের জন্য বরাদ্ধ পেয়েছি। চাল ছাড়াতে ১ থেকে ৩ হাজার টাকা নেয়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, ব্যানার এবং মাষ্টার রোলের খরচ বাবদ ওই টাকা নেয়া হয়েছে।
এবিষয়ে বাউফল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বশির গাজী সাংবাদিকদের বলেন, বাউফলে মোট ৬৫টি পূজা মন্ডপের জন্য ৫‘শত কেজি করে চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।