আজ শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৫১ পূর্বাহ্ন

Logo
News Headline :
বদলগাছীতে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ডিলার নিয়োগে অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগে অনশন! নলছিটিতে ইঁদুর মা*রা*র ওষুধ খেয়ে প্রাণ গেল দুই ভাই-বোনের  কমলগঞ্জে মণিপুরী পাড়ায় পাড়ায় চলছে মহারাসলীলা উদযাপনের প্রস্তুতি  মুন্সীগঞ্জে হত্যা মামলায় ৩ আসামির আমৃত্যু কারাদণ্ড অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বরাবরে সিলেটের নাগরিক সংগঠনের স্মারকলিপি প্রদান রাজনগরে ভগবত শিক্ষা একাডেমির অন্নকুট মহোৎসব উদযাপন  সুনামগঞ্জে ছাত্র সমন্বয়ক দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ৫ নওগাঁর ধামইরহাটে বিএনপির ইউনিয়ন কর্মীসভা অনুষ্ঠিত  নওগাঁর রানীনগরে এক এলজিইডির উপ-সহকারী প্রকৌশলীর গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা ‘আগেই ভালো ছিল’ বলার সুযোগ দিচ্ছি, এটা আমাদের ব্যর্থতা : হাসনাত
ছয় মাসেই ধসে পড়েছে তিন কোটি টাকার সেতু

ছয় মাসেই ধসে পড়েছে তিন কোটি টাকার সেতু

ডেস্ক নিউজ :-

যশোরের মনিরামপুরে চলাচলের জন্য খুলে দেওয়ার ৬ মাস পার না হতেই ধসে পড়েছে নবনির্মিত ৪২ মিটার লম্বা একটি সেতুর পাটাতনের পলেস্তারা। উপজেলার চিনাটোলা বাজারে হরিহর নদের উপর তিন কোটি ১২ লাখ ৯৩ হাজার ২১১ টাকায় নির্মিত সেতুটি চলতি বছরের মার্চের দিকে জনসাধারণের চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছিল।

এরপর আগস্টের প্রথম দিকে সেতুর পাটাতনের পলেস্তারা ধসে পড়তে শুরু করে। ধীরে ধীরে বড় একটি অংশ ধসে রড বেরিয়ে পড়ায় গেল দুই মাস ধরে সেতু পারাপারে ভোগান্তিতে পড়েছেন পথচারীরা।

স্থানীয়রা বলছেন, বরাদ্দের সিংহভাগ টাকা লোপাট হওয়ায় উদ্বোধনের পরপরই সেতুর পাটাতনের পলেস্তারা ধসে পড়ছে। দায়সারাভাবে সেতুর কাজ করার সময় বাধা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু নানাভাবে তাদের ভয় দেখানো হয়।

সরেজমিন সেতুর দুই পাড়ের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে ও উপজেলা প্রকৌশলীর দফতর সূত্রে জানা গেছে, চিনাটোলা বাজার থেকে মনোহরপুর বাজার সড়কের হরিহর নদের উপর ২০২১ সালের এপ্রিল মাসে ৪২ মিটার দৈর্ঘের সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হয়। ২০২২ সালে ৬ অক্টোবর সেতুর কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। ঠিকাদার নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করে নির্ধারিত মেয়াদের এক বছরের বেশি সময় পর দায়সারাভাবে সেতুর কাজ শেষ করেন। এরপর চলতি বছরের প্রথম দিকে জনসাধারণের চলাচলের জন্য সেতু খুলে দেওয়া হয়।

সেতুর পূর্বপাড়ের বাসিন্দা আমির হোসেন বলেন, সেতু খুলে দেওয়ার ৪-৫ মাসের মাথায় মেঝের প্লাস্টার ফেটে নদীতে পড়ে কয়েকটি গর্ত দেখা দিয়েছে। পরে উপজেলায় খবর দিলে ইঞ্জিনিয়ার অফিসের লোক এসে গর্তগুলো বন্ধ করে দিতে চায়। আমরা বাধা দিয়েছি। বলেছি, সেতু ভেঙে নতুন করে করতে হবে। তখন উপর থেকে আরো লোকজন আসে।আমাদের বাধার মুখে তারা সেতুর মেঝে ভাঙা শুরু করে। এখন কাজ বন্ধ করে রেখেছে ইঞ্জিনিয়ার অফিস। এতে করে চলাচলে আমাদের কষ্ট হচ্ছে।

স্থানীয় জিয়ারুল গাজী বলেন, সেতু তৈরির সময় ঠিকাদারের লোকজন দায়সারাভাবে কাজ চালাচ্ছিল। তারা অন্য এলাকা থেকে সিমেন্ট ও বালু মিশিয়ে ট্রাকে করে নিয়ে এসে ঢালাই দিয়েছে। যতটুকু মোটা করে দেওয়ার কথা ছিল সেই নিয়মে ঢালাই দেওয়া হয়নি। এখন সেতুর স্ল্যাব ভাঙার সময় হাতুড়ির আঘাতে ধুলো উড়ছে। এছাড়া সেতুর মাঝের অংশ নিচের দিকে চাপা। একটু বৃষ্টি হলেই সেতুর মাঝখানে পানি জমে থাকে।

সেতুপাড়ের চা দোকানদার আব্দুর রহমান বলেন, সেতুর পূর্বপাড়ে উদ্বোধনের একটি নামফলক স্থাপন করা আছে।সাবেক প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য সেতু উদ্বোধন করার কথা ছিল। কিন্তু তিনি উদ্বোধন করতে আসেননি। বরং নামফলকে উদ্বোধনের যেই তারিখ দেওয়া আছে তারও ২০-২২ দিন পরে এসে নামফলক লাগানো হয়েছে।

এই বিষয়ে শ্যামকুড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলমগীর বলেন, স্থানীয়দের অভিযোগ সত্য না। ক্ষোভ থেকে এখন তারা অনেক কথা বলছেন।

স্থানীয়রা বলছেন, হরিহর নদের চিনাটোলা বাজার সংলগ্ন এই সেতুর উপর দিয়ে মনিরামপুরের পূর্বাঞ্চলের ৫টি ইউনিয়নসহ অভয়নগর, কেশবপুর, খুলনা, ডুমুরিয়া উপজেলার মানুষ যাতায়াত করেন। গ্রামীণ সড়ক হলেও দিনরাত এই রাস্তায় খুব চাপ থাকে। প্রতিদিন এই সড়কে অন্তত ৫০ হাজারের বেশি মানুষ যাতায়াত করে। ট্রাক ভরে নওয়াপাড়া থেকে সার, পাথর, রড সিমেন্ট সাতক্ষীরা, কেশবপুর ও মনিরামপুরের বিভিন্ন অঞ্চলে নেয়া হয়। সেতুর মেঝে ভেঙে পড়ায় এখন চলাচল ও পণ্য পরিবহনে মানুষকে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।

সেতু নির্মাণের ঠিকাদার শামীম চাকলাদার বলেন, আমার লাইসেন্সে অন্য ঠিকাদার কাজ করেছেন। মেঝে (স্ল্যাব) ঢালাইয়ের সময় অন্য জায়গায় সিমেন্ট-বালু মিশিয়ে এনে কাজ করা হয়েছে। এতে উপাদানের স্থায়ীত্ব কমে যাওয়ায় এমনটি হতে পারে।

সেতুর কাজ দেখভালের দায়িত্বে থাকা উপজেলা প্রকৌশলী দফতরের সাবেক উপসহকারী প্রকৌশলী গাউসুল আজম বলেন, শুনেছি ৫ আগস্ট সরকার পতনের দিন স্থানীয় লোকজন পিটিয়ে সেতুর মেঝে ভেঙে ফেলেছে। ঠিকাদার ও স্থানীয় আলমগীর চেয়ারম্যান একই দাবি করেছেন।

মনিরামপুর উপজেলা প্রকৌশলী বিদ্যুৎ দাস বলেন, সেতুর স্ল্যাব ধসে পড়ার খবর পেয়ে আমরা মেরামতের উদ্যোগ নিয়েছিলাম। প্রথম দিকে স্থানীয়রা বাধা দিয়েছিল। এখন সবার সঙ্গে কথা হয়েছে। দ্রুত সেতু সংস্কার কাজ শুরু করা হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

All rights reserved © 2024 ourdailybangladesh.com