আজ শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৪৮ পূর্বাহ্ন

Logo
News Headline :
বদলগাছীতে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ডিলার নিয়োগে অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগে অনশন! নলছিটিতে ইঁদুর মা*রা*র ওষুধ খেয়ে প্রাণ গেল দুই ভাই-বোনের  কমলগঞ্জে মণিপুরী পাড়ায় পাড়ায় চলছে মহারাসলীলা উদযাপনের প্রস্তুতি  মুন্সীগঞ্জে হত্যা মামলায় ৩ আসামির আমৃত্যু কারাদণ্ড অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বরাবরে সিলেটের নাগরিক সংগঠনের স্মারকলিপি প্রদান রাজনগরে ভগবত শিক্ষা একাডেমির অন্নকুট মহোৎসব উদযাপন  সুনামগঞ্জে ছাত্র সমন্বয়ক দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ৫ নওগাঁর ধামইরহাটে বিএনপির ইউনিয়ন কর্মীসভা অনুষ্ঠিত  নওগাঁর রানীনগরে এক এলজিইডির উপ-সহকারী প্রকৌশলীর গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা ‘আগেই ভালো ছিল’ বলার সুযোগ দিচ্ছি, এটা আমাদের ব্যর্থতা : হাসনাত
চট্টগ্রামে মদ ও ইয়াবা খাইয়ে স্ত্রীকে পাহাড়ে নিয়ে খুন!

চট্টগ্রামে মদ ও ইয়াবা খাইয়ে স্ত্রীকে পাহাড়ে নিয়ে খুন!

ডেস্ক নিউজ :-

চট্টগ্রামের আনোয়ারায় পাহাড় থেকে গৃহবধূ আমেনা বেগমের (৩৫) মরদেহ উদ্ধারের চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এ ঘটনায় জড়িত দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

চট্টগ্রামসহ পার্বত্য এলাকা খাগড়াছড়ি ও বাঘাইছড়িতে টানা ৭২ ঘণ্টার অভিযান শেষে বুধবার (২৩ অক্টোবর) তাদের গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন পিবিআই চট্টগ্রাম জেলার পরিদর্শক মোহাম্মদ দিদারুল ফেরদৌস।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- চট্টগ্রাম নগরের ডবলমুরিং থানার হাজী পাড়া এলাকার সুলতান আহমেদের ছেলে জাহেদ নাবেদ ওরফে নাহিদ (৩০) ও আনোয়ারা উপজেলার মোহাম্মদ ইরফান (৩২)।

সম্প্রতি তিন দিনের রিমান্ড শেষে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন আসামি নাহিদ। জবানবন্দি শেষে দুজনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।

গত ৩ অক্টোবর আনোয়ারা উপজেলার বৈরাগ এলাকার চায়না ইকোনমিক জোন কার্যালয়ের পাশে পরিত্যক্ত একটি ইটভাটা থেকে আমেনা বেগমের মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।

পুলিশের ভাষ্যমতে, মরদেহের কিছু অংশ শেয়াল বা কুকুর খেয়ে ফেলায় এবং পচে যাওয়ায় শনাক্ত করা যাচ্ছিল না পরিচয়। এ অবস্থায় পরিচয় শনাক্তের দায়িত্ব পায় পিবিআই।

দায়িত্ব পেয়ে একদিন পর পিবিআই জানায়, মরদেহটি ৩৫ বছর বয়সী আমেনা বেগমের। তিনি চট্টগ্রাম নগরের বলুয়ার দিঘির পাড় এলাকার আবুল কালাম সওদাগর কলোনির কামাল উদ্দিনের মেয়ে। তার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার নাগেরকান্দি গ্রামে।

ঐ সময় পিবিআই চট্টগ্রাম জেলা ইউনিটের এসআই শাহাদাত হোসেন বলেন, আমেনা বেগমের পেটে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে- আসামিরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করে মরদেহটি পাহাড়ে ফেলে চলে যায়।

পরে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তা ও গোপন তথ্যের ভিত্তিতে পার্বত্য চট্টগ্রামের খাগড়াছড়ি ও বাঘাইছড়ির পাহাড়ে টানা অভিযান চালিয়ে ঘটনার রহস্য উদঘাটন করে পিবিআই। একইসঙ্গে ঘটনায় জড়িত দুজনকে গ্রেফতার করা হয়।

আসামিদের দেওয়া তথ্য ও পুলিশ সূত্র জানায়, গত ৩০ সেপ্টেম্বর খুন হওয়া আমেনার স্বামী ইয়াসিন আরাফাত ফোন করে নাহিদকে জানান- তিনি দুবাই থেকে এসেছেন। পার্টি করবেন। নাহিদ নগরের আগ্রাবাদে থাকেন। ইয়াসিনের সঙ্গে তার আরেক বন্ধু ইরফানসহ আগ্রাবাদে যান। সেখান থেকে ঐদিন রাতে অটোরিকশায় তারা আনোয়ারায় ইরফানের বাড়িতে যান। সেখানে তারা ইয়াবা ও মদ খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন।

পরদিন ১ অক্টোবর রাত ১০টার দিকে ইয়াসিনের স্ত্রী আমেনা তাকে ফোন করেন। এর কিছু সময় পর ইয়াসিন ও ইরফান আরেক বন্ধুর গাড়িতে করে নগরের কালামিয়া বাজার এলাকায় যান। তখন নাহিদ ইরফানের বাড়িতেই ছিলেন। রাত সাড়ে ১২টার দিকে আমেনাসহ দুজন আবার ইরফানের বাড়ি ফিরে যান।

পরে চারজন মিলে একসঙ্গে ইয়াবা ও মদ সেবন করেন। রাত ৩টার দিকে তারা গাড়ি নিয়ে ঘুরতে বের হওয়ার পরিকল্পনা করেন। শুরুতে কর্ণফুলী টানেলে যাওয়ার কথা থাকলেও পরে তা পরিবর্তন করে পাহাড়ে বসে মদ খাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। ইরফান তাদের আনোয়ারার একটি পাহাড়ে নিয়ে যান। সেখানে যাওয়ার পর ইয়াসিন ও তার স্ত্রী আমেনার মধ্যে ঝগড়া শুরু হয়।

ঝগড়ার একপর্যায়ে হঠাৎ আমেনাকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরেন ইরফান। এরপর ইয়াসিন কোমর থেকে ছুরি বের করে আমেনার পেটে ঢুকিয়ে দেন। কিছুক্ষণ পর আমেনার মৃত্যু হলে তিনজনে মিলে মরদেহটি নালার মধ্যে ফেলে দেন। এরপর সেখান থেকে তারা ইয়াসিরের খালাতো ভাইয়ের বাসায় চলে যান। পরে যে যার মতো চলে যান।

পুলিশ সূত্র আরো জানায়, স্ত্রীকে খুনের পর মরদেহ পাহাড়ে রেখে ৩ অক্টোবর পুনরায় দুবাই চলে যান ইয়াসিন। দুবাইপ্রবাসী ইয়াসিনের সঙ্গে আমেনার এটি দ্বিতীয় বিয়ে। তার আগের সংসারে দুই সন্তান রয়েছে। এই সংসারে একটি সন্তান রয়েছে। কিন্তু পুত্রবধূ হিসেবে আমেনাকে মেনে নিতে পারেনি ইয়াসিনের পরিবার। তাই আমেনাকে নগরের বাকলিয়া থানার তক্তারপুল এলাকায় একটি বাসায় রাখতেন ইয়াসিন।

ঘটনার পর আমেনার বাবা কামাল উদ্দিন বলেন, আমার মেয়েকে বেড়ানোর কথা বলে আনোয়ারায় নিয়ে যায় তার স্বামী। সেখানে খুন করে মরদেহ ফেলে রেখে বিদেশে চলে যায় সে। স্বামীই আমার মেয়েকে খুন করেছে।

এ প্রসঙ্গে আনোয়ারা থানার ওসি মোহাম্মদ মনির হোসেন বলেন, পিবিআই ঘটনায় জড়িত দুজনকে গ্রেফতার করেছে বলে আমরা জেনেছি। বাকি আসামিদের গ্রেফতারে তারা কাজ করছে। আমরাও চেষ্টা করছি।

Please Share This Post in Your Social Media

All rights reserved © 2024 ourdailybangladesh.com