আজ বুধবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৪৬ অপরাহ্ন

Logo
ঘাতকদের স্বীকারোক্তিতে ফুটফুটে মুনতাহাকে হত্যার রোমহর্ষক তথ্য

ঘাতকদের স্বীকারোক্তিতে ফুটফুটে মুনতাহাকে হত্যার রোমহর্ষক তথ্য

ডেস্ক নিউজ :-

সিলেটের কানাইঘাটে নিখোঁজের এক সপ্তাহ পর শিশু মুনতাহা আক্তারের (৬) মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। রোববার (১০ নভেম্বর) ভোরে গলায় রশি প্যাঁচানো অবস্থায় বাড়ির পাশের একটি ডোবা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহত মুনতাহা উপজেলার সদর ইউনিয়নের বীরদল গ্রামের শামীম আহমদের মেয়ে। 

মুনতাহার লাশ উদ্ধারের পর চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। আটক তিন নারী হলেন বীরদল গ্রামের মার্জিয়া আক্তার, তার মা আলিফজান ও নানি কুতুবজান।

শিশুটির লাশ মূলত ডোবায় কাদার মধ্যে পুঁতে রাখা ছিল। সন্দেহভাজন এক তরুণী আটক হওয়ার পর তার মা ঘটনাকে অন্য রূপ দিতে লাশ ডোবা থেকে তুলে রোববার ভোরে শিশুটির বাড়ির পাশে একটি পুকুরে ফেলে আসতে যান। তবে পথে স্থানীয় লোকজনের হাতে আটক হন ওই নারী।

লাশ উদ্ধারের সময় শিশু মুনতাহার শরীরে কাদা লেগে ছিল। গলায় রশিজাতীয় কিছু প্যাঁচানো ছিল। এতে সন্দেহ করা হচ্ছে, গলায় রশিজাতীয় কিছু দিয়ে পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে তাকে হত্যা করা হয়েছে।

শিশুটির লাশ উদ্ধারের পর স্থানীয় বিক্ষুব্ধ লোকজন আলিফজানের বাড়ি ভাঙচুর করে তাতে আগুন দেন। পরে এসে পুলিশ তাদের নিবৃত্ত করে।

জানা গেছে, গত ৩ নভেম্বর বিকেল থেকে নিখোঁজ ছিল মুনতাহা। বিভিন্নভাবে খোঁজ করেও পাওয়া যাচ্ছিল না তাকে। সর্বশেষ শিশুটিকে উদ্ধারের জন্য পুরস্কারও ঘোষণা করা হয়। এর মধ্যে পুলিশ শনিবার রাতে প্রতিবেশী মার্জিয়া আক্তার নামের এক তরুণীকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। মুনতাহাকে প্রাইভেটও পড়াতেন মার্জিয়া। মার্জিয়াদের বাড়িতে তার মা আলিফজান ও বৃদ্ধ নানি থাকেন।

কানাইঘাটের সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আফসার উদ্দিন আহমদ চৌধুরী বলেন, স্থানীয় একটি অনলাইন পত্রিকার প্রতিনিধিরা নিখোঁজ মুনতাহার সন্ধানে তাদের বাড়িতে গিয়ে লাইভ করে। তখন বাড়ির সবাইকে মুনতাহার ব্যাপারে জিজ্ঞেস করে। এ সময় পাশের ঘরের মার্জিয়া নামে এক নারী একেকবার একেক রকম কথা বলতে থাকেন। মার্জিয়া মুনতাহাকে পড়াতেন। দিনের একটা বড় সময় মার্জিয়া তার সঙ্গেই থাকতেন। উল্টাপাল্টা কথা শুনে সন্দেহ হলে সন্ধ্যায় কানাইঘাট থানার পুলিশ মার্জিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসে।

সিলেটের সহকারী পুলিশ সুপার (কানাইঘাট সার্কেল) অলক কান্তি শর্মা গণমাধ্যমকে বলেন, মুনতাহা নিখোঁজের ঘটনায় শনিবার রাতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য প্রতিবেশী মার্জিয়াকে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। মেয়েকে আটকের পর মার্জিয়ার মা মনে করেছিলেন, পুলিশ সবকিছু জেনে গেছে। এ জন্য রাতেই ডোবায় পুঁতে রাখা মুনতাহার লাশ তুলে পুকুরে ফেলার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু প্রতিবেশীরা বিষয়টি বুঝতে পেরে পুকুরে লাশ ফেলে দেয়ার আগেই তাকে আটক করে। এ সময় শিশুটিকে নিজের কোল থেকে মাটিতে ফেলে দিয়েছিলেন আলিফজান। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ও আলিফজানকে আটক করে।

এই পুলিশ কর্মকর্তা আরও বলেন, এ ঘটনায় আটক আলিফজান ও মার্জিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে তারা বলেছেন, মুনতাহার বাবার সঙ্গে তাদের বিরোধ আছে। তবে কী নিয়ে বিরোধ, তা জানা যায়নি। নিহত শিশু মুনতাহার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media

All rights reserved © 2024 ourdailybangladesh.com