আজ বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:০৭ অপরাহ্ন

Logo
আসুন আমরা সবাই সব ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে জাতির জন্য ঐক্যবদ্ধ হই :-জামায়াত আমির

আসুন আমরা সবাই সব ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে জাতির জন্য ঐক্যবদ্ধ হই :-জামায়াত আমির

ডেস্ক নিউজ :-

মানবিক বাংলাদেশ গড়তে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আমাদের জন্য এদেশের মানবতার যেন কোনো ক্ষতি না হয়, আল্লাহ যেন সে তৌফিক দান করেন। সবাই মিলে যেন একটা মানবিক বাংলাদেশ গঠন করতে পারি।

তিনি বলেন, একা জামায়াতে ইসলাম এটা পারবে না। আমরা যারা আল্লাহকে ভয় করি এবং মানবিক দেশের চেতনা ধারণ করি, আসুন আমরা সবাই সব ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে জাতির জন্য এবং নিজেদের প্রয়োজনে ঐক্যবদ্ধ হই।

শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) রাজধানীর চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগর দক্ষিণের রুকন সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দলটির আমির এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, তারা (আওয়ামী লীগ) মনে করেছিল, আমরাই সব। তারা পাষাণ হয়েছিল, তাই গুলির নির্দেশ দিয়েছে। শুধু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকেই নামিয়ে দেওয়া হয়নি, হেলমেট ও মুগুর বাহিনীকেও নামিয়ে দিয়েছিল। কী নিষ্ঠুরভাবে তারা হত্যাকাণ্ড চালিয়েছিল, অর্ধ জীবিত মানুষকে ট্যাংক থেকে ফেলে দেওয়া হয়েছিল।

জামায়াতের আমির আরও বলেন, যারা ক্ষমতায় আছেন তাদের মানুষ ঐকমত্যের ভিত্তিতেই ক্ষমতায় বসিয়েছে। আমরা তাদের বলব, ১৮ কোটি মানুষকে তাদের সম্মান করতে হবে। এই বিপ্লবের চেতনাকে ধারণ করে এসব জঞ্জাল পরিষ্কার করতে হবে। জনগণকে সাথে নিয়ে সাহসিকতার সাথে আপনাদের এগিয়ে যেতে হবে। আর এদেশের মানুষের রক্ত এদেশের মানুষ দেখতে চায় না।

সাভারের সিআরপিতে চিকিৎসারতদের জিন্দা শহীদ বলে অঝোরে কাঁদেন জামায়াতের আমির। তিনি বলেন, আমি জানতে পারলাম সাভারের সিআরপি হাসপাতালে জীবন্ত শহীদ ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এখনো তাদের দেখতে কেউ যায়নি। আমি ভীষণভাবে লজ্জিত হলাম, অনুতপ্ত হলাম। আমাদেরও খেয়ালের বাইরে ছিল। গতকাল রাতে সেখানে গেলাম, তাদের দেখলাম। তারা জিন্দা শহীদ!

জুলাইয়ের বিপ্লবে আহতদের স্মরণ করে জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান বলেন, কাতারে কাতারে তারা বিছানায় পড়ে আছে। তরতাজা যুবক। জাতির মুক্তির আন্দোলনে যুবকদের ডাকে সাড়া দিয়ে চলে এসেছিল। জালিমের বুলেট তাদের বিদ্ধ করে দিয়েছে। মেরুদণ্ডের হাড় ভেঙে, স্পাইনাল কর্ডকে আহত করে ফেলেছে। কারো দুটি হাত, দুটি পা সবকিছুই অবশ হয়ে গেছে, যেন মৃত একটি মানুষের দেহে শ্বাস প্রশ্বাস চলছে। কারো নিচের দুই অঙ্গ অবশ।

তিনি বলেন, আমি যখন তাদের কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, কেমন আছেন। তারা হাশিমুখে বলেছে, ভালো আছি। আমি অবাক হয়ে গেলাম। এত কষ্ট এত ব্যথা তাদের। একটা মানুষ জালিমদের আক্রমণে শারীরিকভাবে অক্ষম হয়ে পড়েছে। এরপর হাসতে হাসতে বলছে, আমরা ভালো আছি। তাদের জিজ্ঞেস করলাম, কীভাবে হাসতে পারো ভাই? তারা বলছে, আল্লাহ তাআলা তৌফিক দিয়েছেন, এই জন্যই হাসি। এর কারণ কী বলব, আল্লাহ তো জীবন একটাই দিয়েছেন। এই জীবনটা যে জাতির জন্য আল্লাহর সামনে পেশ করতে পেরেছি, তাই আমি হাসি। আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার। এই হাসি সত্যিকারের হাসি। 

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, গণমাধ্যমে দেখেছেন ৭-৮ বছরের শিশু পথে নেমে এসেছিল সেদিন হাতে ইট নিয়ে। তাকে জিজ্ঞেস করা হলো, কেনো নেমে এসেছে, সে বলেছিল স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে নেমে এসেছি। আমার ভাইদের তারা গুলি করে হত্যা করেছে। গুলি করে হত্যা করা হলে আমি শহীদ হয়ে যাব, মা বাবাকে বলে এসেছি, আমাকে ক্ষমা করে দাও। আমি শহীদ হয়ে গেলে শহীদের সাথে দাফন করে দেবে। ৭-৮ বছরের শিশু স্বৈরাচারকে চিনতে পারল, তারা নিজেদের চিনতে পারল না। ইজ্জত-ক্ষমতা দেওয়ার মালিক আল্লাহ, তা কেড়ে নেওয়ার মালিকও আল্লাহ। আল্লাহ তাআলা যারা জুলুম করে, তাদের একটি সীমা পর্যন্ত যাওয়ার সুযোগ দেন। এরপর আল্লার দৃষ্টিতে যখন সীমা অতিক্রম করে তখন তিনি ধরেন।

Please Share This Post in Your Social Media

All rights reserved © 2024 ourdailybangladesh.com