আজ বৃহস্পতিবার, ০২ জানুয়ারী ২০২৫, ১০:১৪ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক :–
চট্টগ্রামে বেসরকারি প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীকে মারধরের পর তোপের মুখে পড়েছেন প্রান্ত বড়ুয়া নামে এক সমন্বয়ক। পরে পুলিশের উপস্থিতিতে হামলার দায় স্বীকার করে ক্ষমা চেয়ে বিষয়টি মীমাংসা করেন তিনি।
তবে ওই মীমাংসা বৈঠকের সময় সমন্বয়ক গ্রুপের এক শিক্ষার্থী একজন অ্যাসোসিয়েট প্রফেসরের গায়ে হাত তুলেন বলে অভিযোগ উঠেছে। যদিও এটিকে উদ্দেশ্যমূলক মনে করছেন না ওই প্রফেসর। তবে শিক্ষকের গায়ে হাত তোলাকে কেন্দ্র করে শেষ বিকেলে আবারও উত্তাপ ছড়িয়েছে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে।
সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজারী গলি ক্যাম্পাসে এ ঘটনা ঘটে। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী, প্রত্যক্ষদর্শী, পুলিশ ও শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সকালে প্রান্ত বড়ুয়া নামে একজন সমন্বয়ক বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসই এর ৪৪তম ব্যাচের তানভীর নামে একজন শিক্ষার্থীকে ফটকের সামনে মারধর করেন। ওই সময় উপস্থিত শিক্ষার্থীরা তানভীরকে ছাড়িয়ে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে আবারও তার ওপর হামলার চেষ্টা করেন প্রান্ত বড়ুয়া।
প্রান্ত বড়ুয়া আইন বিভাগের শিক্ষার্থী। আট তলা ওই ভবনের দুই ও তিন তলায় আইন বিভাগ ও চতুর্থ থেকে ষষ্ঠ তলা পর্যন্ত সিএসই বিভাগ। বাকিগুলোতে ইকোনমিক্স ও ট্রিপল ই বিভাগ।
সিএসই বিভাগের শিক্ষার্থীর ওপর দফায় দফায় হামলার খবর ছড়িয়ে পড়লে এটি নিয়ে উত্তেজনা ছড়ায় বিভাগটির শিক্ষার্থীর মধ্যে। এক পর্যায়ে সিএসই বিভাগের শিক্ষার্থীরা এক হয়ে আইন বিভাগ ঘেরাও করে।
এর মধ্যে পুলিশকে খবর দিলে ঘটনাস্থলে পুলিশ যায়। পরে পুলিশের উপস্থিতিতে মারধরের বিষয়ে প্রান্ত বড়ুয়া ক্ষমা চাইলে বিষয়টি মীমাংসা হয়। তবে বিকেলের দিকে খবর ছড়িয়ে পড়ে মীমাংসা বৈঠকের সময় ফরহাদ পাটোয়ারি নামে বিবিএর এক শিক্ষার্থী সিএসসি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মিনহাজ হোসাইনের গায়ে হাত তুলেছে।
ফরহাদ জিইসি মোড়ের মেইন ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থী। সমন্বয়ক প্রান্ত বড়ুয়ার পক্ষ নিয়ে তিনি হাজারীগলি ক্যাম্পাসে এসেছিলেন। এটি নিয়ে আবারও উত্তেজনা ছড়িয়েছে শিক্ষার্থীদের মধ্যে।
জানতে চাইলে মিনহাজ হোসেন বলেন, ‘প্রান্ত বড়ুয়া নামে একজন শিক্ষার্থী তানভীর নামে আরেকজন শিক্ষার্থীকে মারধর করেছে, এটি নিয়ে কিছু উত্তেজনা ছড়িয়েছে। পরে প্রান্ত এজন্য ক্ষমাও চেয়েছে। উত্তেজনার সময়ে কেউ একজন আমাকে ধাক্কা দিয়েছে।
এটাকে ঠিক গায়ে হাত দেয়া আমি বলব না। দুই পক্ষ মুখোমুখি ছিল। তাদের উত্তেজনার সময়ে আমরা মাঝখানে দাঁড়িয়েছি। এর মধ্যে ভুলবশত আমার গায়েও হাত লেগেছে। তাছাড়া ভিন্ন ক্যাম্পাসের হলেও ওই শিক্ষার্থীও আমাদের ছাত্র।’
এই বিষয়ে কথা বলতে প্রান্ত বড়ুয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ভীরের মধ্যে আছে উল্লেখ করে হোয়াটসঅ্যাপে ম্যাসেজ দিতে বলেন। পরে হোয়াটসঅ্যাপে ম্যাসেজ দিলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
জানতে চাইলে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল করিম প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘এক শিক্ষার্থীকে মারধরের জের ধরে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ঝামেলা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। এখন শিক্ষকেরা বসে সমাধান করছেন। যিনি মারধর করেছেন তিনি ক্ষমা চেয়েছেন।’
এদিকে শিক্ষকের গায়ে হাত তোলার অভিযোগ তুলে বিকালের দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসে জড়ো হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ গ্রুপে ধ্রুব দে নামে এক শিক্ষার্থী লিখেছেন, ‘আজকে আইন বিভাগের একজন শিক্ষার্থী প্রান্ত বড়ুয়া আমাদের ডিপার্টমেন্টের শিক্ষার্থী তানভীরের ওপর হামলা করে।
সেখানে বিবিএ ডিপার্টমেন্টের ছাত্র ফরহাদ পাটোয়ারী আইন বিভাগের রুমে আমাদের ডিপার্টমেন্টের শিক্ষকের সঙ্গে বেয়াদবি করেছে। যেটা কখনোই মেনে নেয়ার মত নয়। এই মুহূর্তে বিচারের জন্য জিইসি ক্যাম্পাসে যাওয়া জরুরি। সবাইকে অনুরোধ করছি জিইসি ক্যাম্পাসে আসার জন্য।’