আজ শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৪১ পূর্বাহ্ন
রাজশাহী প্রতিনিধি :
রাজশাহী মহানগরীর সরকারি মহিলা কলেজের উত্তর-পশ্চিম প্রাচীর সংলগ্ন এলাকায় সরকারি জায়গা দখল করে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সরজমিনে দেখা যায় তিনটি দোকান ঘর ও আরেকটি জায়গা বিএনপির অফিসের জন্য জায়গা নির্ধারণের সাইনবোর্ড লাগানো রয়েছে।
অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, সরকারি মহিলা কলেজের উত্তর-পশ্চিম সীমানা প্রাচীর সংলগ্ন এলাকায় অবৈধ স্থাপনা তৈরি করে রেখেছেন নগরীর কাদিরাগঞ্জ এলাকার কতিপয় প্রভাবশালী একটা চক্র । ৫ আগস্টের পর এরা এতোটাই প্রভাবশালী ও শক্তিশালী হয়ে উঠছে যার কারণে তাদের বিরুদ্ধে কেউ ভয়ে মুখ খুলতে চায় না। এতে করে মহিলা কলেজের নিরাপত্তার হুমকির কারন হয়ে দাঁড়িয়েছে। যাহা স্থানীয় সরকার (সিটি কর্পোরেশন) আইন, ২০০৯ এর ৯২ (৭) ধারার পরিপন্থি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ । উক্ত বিষয়ে গত ১৩ নভেম্বর বুধবার অভিযুক্তদের কাগজপত্রাদিসহ উপস্থিত হয়ে বক্তব্য প্রদানের জন্য বলা হলে অভিযুক্তরা কাগজপত্র নিয়ে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনে উপস্থিত হয়ে তাদের বক্তব্য পেশ করেছেন। এ সময় মহিলা কলেজের একজন শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন। এদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য জোর দাবি জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সতেচন এলাকাবাসী।
এলাকাবাসী আরোও জানায়, রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া থানাধীন কাদিরগঞ্জ এলাকার হায়দার আলী ছেলে মোঃ সুজন আলী,কাইউমের ছেলে জনি ও সেকেন্দার আলী সহ আনন্দ, রাজু ও রজন দুই টি দোকান আর ১৩ নাম্বার ওয়ার্ড বিএনপির অফিস করার জন্য তারা জায়গা নির্ধারণ করেছে। এলাকা বাসী আরোও বলে ৫ তারিখের পর হারুন উর রশিদ আরেকটা দোকান করে জোর করে। এর আগে গত ৪৫ বছর এখানে বসবাস করেছে হান্নান ভাইয়ের পরিবার ।
একটি দোকান ঘর অবৈধ স্থাপনা করার মূল হোতা সুজন ঘটনা স্থলে উপস্থিত হয়ে জানায়, এটা সরকারী জায়গা সাবেক মেয়র ও তার ভাতিজা অনু ভাই আমাকে এখানে একটা দোকান করে জীবিকা অর্জনের কথা বলেছিলো। ৫ আগস্টের পর হঠাৎ হারুন ভাইকে দোকান করতে দেখে আমিও একটা দোকান করেছি। কিন্তু আমার ভূল হয়েছে মহিলা কলেজের সীমানা দেওয়াল টা আমি আমার দোকানের দেওয়াল হিসেবে ব্যাবহার করা। এ বিষয়ে কে বা কারা মহিলা কলেজ অভিযোগ দেওয়ায় মহিলা কলেজ কর্তৃপক্ষ রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট (সিনিয়র সহকারী সচিব) সাদিয়া আফরিন বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছে । এই জন্য সিটি কর্পোরেশন থেকে ম্যাজিস্ট্রেট ম্যাডাম আসছিল উনি বলছে দোকান তুলে এখানে ফুলের বাগান করবেন যেনো জায়গার সৌন্দর্য বৃদ্ধি হয় আর আপনাদের বিএনপির কার্যলয়ের জন্য যে জায়গা নির্ধারণ করেছেন সেটা সরকারী নিয়মে লিজ নিয়ে করবেন। এ সময়ে সুজন সহ রাজু , আনন্দ, রজন সহ বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিল।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত সেকেন্দারের স্ত্রী বলেন,আমরা বহু বছর থেকে এই জমিতে বসবাস করে আসছি এটা ওয়াকফা সম্পত্তি আমরা নিজেদের নামে নিয়ে আছি আমরা কাগজপত্র সব সিটি কর্পোরেশন ও মহিলা কলেজের কাছে পাঠিয়েছি। পরবর্তীতে সিটি কর্পোরেশন যেটা ব্যবস্থা নিবে নিবে আমাদের কাগজ পাত্র সব ঠিক আছে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত জনি বলে আমি সেকেন্দার চাচা অনুমতি নিয়ে বিএনপি অফিসের পাশে একটি দোকান ঘর করেছি। এছাড়াও আমি বিএনপি রাজনীতির সাথে জড়িত।
এ বিষয়ে সরকারি মহিলা কলেজ প্রিন্সিপাল জুবায়েদা আয়েশা সিদ্দিকা বলেন , পাঁচই আগস্টের পরে উচ্ছেদ অভিযানের জন্য আমরা অভিযোগ দিয়েছিলাম শুনানিতে আমাদের একজন শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন এ বিষয়ে তিনি ভালো বলতে পারবেন আমি ডাক্তারের কাছে আছি। আমি কথা বলতে পারবো না।
এ বিষয়ে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের ম্যাজিস্ট্রেট সাদিয়া আফরিন বলেন, শুনানীতে উভয়পক্ষ উপস্থিত ছিল সরজমিন তদন্তপূর্বক কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। আর তাদের বাগান বা বিএনপির অফিসের অনুমতি দেয়ার আমি কেউ না । যারা এই কথা বলেছে তাদের আমার সামনে হাজির করলে ভাল হয় আমি ওদের দেখতে চাই। খুব দ্রুত তাদের স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে সেটার প্রক্রিয়া চলছে ।