আজ বুধবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৪১ অপরাহ্ন
টঙ্গীবাড়ী প্রতিনিধি:-
টঙ্গিবাড়ী উপজেলার দীঘিরপাড় বাজারের পশ্চিম পাশ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে পদ্মার শাখা ১০০ মিটারে বেশি নদী। এ নদীতে সেতু না থাকায় ট্রলারই একমাত্র যাতায়াতের ভরসা। মুন্সীগঞ্জ, শরীয়তপুর, চাঁদপুরসহ নদী বেষ্টিত ৫টি জেলার অন্তত ১১টি ইউনিয়নের মানুষের যাতায়াত। এতে করে ঝড়-তুফান ও রাত-বিরাতে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে এ পথ ব্যবহারকারী বাসিন্দাদের।
স্থানীয় ও নৌপথ ব্যবহারকারীরা জানান,প্রতি বছর মাপামাপি হয় কিন্তু সেতু আর হচ্ছে না। দীঘিরপাড় বাজারের পাশ দিয়েই বয়ে গেছে পদ্মার শাখা নদী। নদীর পূর্বপাড়ে দীঘিরপাড় বাজার, স্কুল ও কলেজ। মুন্সীগঞ্জ জেলা শহর এবং রাজধানীর ঢাকায় যাতায়াতের পথ ও এ দিক দিয়ে। নদীর পশ্চিম ও উত্তর-দক্ষিণ পাড়ে টঙ্গিবাড়ী উপজেলার দীঘিরপাড়, কামারখাড়া, হাসাইল বানারি ও পাঁচগাঁও ইউনিয়নের ১২-১৩টি গ্রাম, মুন্সীগঞ্জ সদরের শিলই ও বাংলাবাজারের ৩-৪টি গ্রাম, শরীয়তপুরের নওপাড়া, চরআত্রা, কাঁচিকাটা, কুণ্ডের চর এবং কোরবি মনিরাবাদ ঘড়িশালসহ ৫টি ইউনিয়নের ১০-১২টি গ্রাম। এ ছাড়াও কুমিল্লার জেলার এলামচর, পূর্ব বানিয়াল, চাঁদপুরে হাইমচরের কিছু অংশ মুন্সীগঞ্জ জেলার সঙ্গে লাগোয়া। এসব ইউনিয়নের গ্রামগুলোর অন্তত দুই লাখ মানুষ তাদের প্রয়োজনে প্রতিদিনই ট্রলারে করে এ নদী পারাপার হচ্ছেন। নদী পারাপার হয়ে টঙ্গিবাড়ী শহর, মুন্সীগঞ্জ সদর, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জে যাতায়াত করেন।
এসব গ্রামবাসী দীঘিরপাড় বাজার ঘাট এলাকায় দিনের পর দিন একটি সেতুর দাবি জানিয়ে এলেও তাদের সে দাবি পূরণ হচ্ছে না।
দীঘিরপাড় বাজার এলাকায় দেখা যায়, ট্রলারে করে নদীর পশ্চিমপাড় থেকে মানুষজন আসছেন। ট্রলার থেকে নেমে তাদের প্রয়োজনে দীঘিরপাড় বাজার, টঙ্গিবাড়ী উপজেলা পরিষদ, মুন্সীগঞ্জ শহর ও রাজধানীর ঢাকার দিকে ছুটছেন। একইভাবে প্রয়োজন শেষে এ পাড় থেকে ট্রলারে করে নদীর পশ্চিম পাড়ে যাচ্ছেন যাত্রীরা। এ ছাড়াও নদীর উত্তর এবং দক্ষিণ পাশ থেকে ট্রলার ভর্তি করে দীঘিরপাড় হাটে কেউ মালামাল বিক্রি করতে আসছেন। কেউ কেউ আবার এ হাট থেকে তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও গৃহস্থালির জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনে নিয়ে বাড়ি ফিরছেন। সবকিছুই হচ্ছে ট্রলারের উপর ভরসা করে। এ সময় শরীয়তপুর কাঁচিকাটা ইউনিয়নের বাসিন্দা ফাতেমা বেগম বলেন, আমরা শরীয়তপুরের মানুষ হলেও আমাদের সব কাজকর্ম মুন্সীগঞ্জেই। আমাদের হাট-বাজার করতে হয় দীঘিরপাড় বাজারে। ঢাকায় যাই এ পথ দিয়ে। রাত-বিরাতে ট্রলার পাওয়া যায় না। ট্রলার পেলেও ৫০ টাকার ভাড়া ৫০০ টাকা গুনতে হয়। নদীপথে সময়ও লাগে বেশি।
শিক্ষার্থী মোবারক হোসেন বলেন, সপ্তাহে ৪ দিন ট্রলারে করে পদ্মার শাখা নদী পার হয়ে জেলা শহরের কলেজে আসা-যাওয়া করতে হয়। আব্দুল মতিন বলেন, দীঘিরপাড় খেয়াঘাট থেকে আমার বাড়ির দূরত্ব দুই কিলোমিটার। নদীর পশ্চিমপাড়ে সড়কের অবস্থাও তেমন ভালো না। যাত্রীবাহী কোনো যানবাহন চলে না। এইটুকু রাস্তা পাড়ি দিয়ে দীঘিরপাড়ে আসা-যাওয়া করতে ২০০ টাকা ভাড়া গুনতে হয়। সেতু নেই। ঘাটে এসে ট্রলারের জন্য প্রতিদিন ৩০-৪০ মিনিট বসে থাকতে হয়। তবে ট্রলার পার হতে পারলে দীঘিরপাড় থেকে মুন্সীগঞ্জে ১৫ কিলোমিটার দূরত্বে ৩০ মিনিটের মধ্যে যেতে পারি। যাওয়া-আসা করতেও মাত্র ৮০ টাকা খরচ হয়। একটি সেতুই আমাদের ভাগ্য বদল করতে পারে