পলক দুর্নীতির সিন্ডিকেটের নেতৃত্ব দিতেন

আওয়ার ডেইলি বাংলাদেশ ডেস্ক:-

ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সাড়ে ১৫ বছর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ ছিল দুর্নীতির অভয়ারণ্য। দুর্নীতির এই সিন্ডিকেটের নেতৃত্ব দিতেন খোদ মন্ত্রণালয়টির সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। ডিজিটাল বাংলাদেশ বা স্মার্ট বাংলাদেশ, রোবট অলিম্পিয়াড এবং শেখ রাসেল দিবসের নামে প্রতিবছর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তরে চলেছে কোটি কোটি টাকা লুটপাট। তারই বিস্তারিত তথ্য তুলে এনেছে কালের কণ্ঠ। প্রতিবেদনটি হুবহু তুলে ধরা হলো-পলক সিন্ডিকেটে দুর্নীতির অভয়ারণ্যডিজিটাল বাংলাদেশ বা স্মার্ট বাংলাদেশ দিবসে বাজেট করা হতো ২৩ থেকে ২৫ কোটি টাকা।

শুধু দিবস পালনের নামে কয়েক বছরে পলক ও তাঁর সহযোগীরা হাতিয়ে নিয়েছেন কয়েক শ কোটি টাকা।তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, শেখ রাসেল দিবসে বাজেট করা হতো অপরিসীম। যা চাওয়া হতো অর্থ বিভাগ থেকে তাই বরাদ্দ দেওয়া হতো। খরচের অতিরিক্ত টাকা নয়ছয় করে ভাউচার দিয়ে তুলে নেওয়া হতো।এ ছাড়া বিভিন্ন দিবস, অনুষ্ঠান ও সেমিনারে করা হতো পদক বাণিজ্য। প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পদক পাইয়ে দিতে দেশের নামিদামি বিভিন্ন ব্যবসায়ী গ্রুপ ও ব্যক্তির কাছ থেকে হাতিয়ে নেওয়া হতো কোটি টাকা পর্যন্ত। সরকারিভাবে যেসংখ্যক পদক নির্ধারিত ছিল তার চেয়ে অনেক বেশি পদক তৈরি করতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বাধ্য করতেন পলক। এসব পদক প্রদান করে হাতিয়ে নেওয়া হতো কোটি টাকা। আবার পাঁচ হাজার টাকা মূল্যের পদকের ক্রেস্ট তৈরিতে খরচ দেখানো হতো দুই লাখ টাকা পর্যন্ত।অনুসন্ধানে পাওয়া বিভিন্ন নথি থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।অনিয়ম-দুর্নীতির এসব খবর যেন কোনো গণমাধ্যমে প্রকাশ না পায় তার জন্য পলকের ছিল নিজস্ব কিছু গণমাধ্যমকর্মী। তাঁদের দিয়ে সংবাদ প্রকাশ বন্ধ করা হতো। প্রযুক্তি বিভাগের একটি বার্ষিক ক্রয় প্রতিবেদনে দেখা গেছে, শুধু মোজাম্মেল হক বাবুর একাত্তর টিভি, একাত্তর মিডিয়া এবং তাঁর নামে-বেনামে বিভিন্ন মিডিয়া হাউসে এর জন্য দেওয়া হয়েছে কয়েক কোটি টাকা।আইসিটি বিভাগের বাজেট বাস্তবায়ন প্রতিবেদনে দেখা গেছে, সর্বশেষ ২০২৩ সালে স্মার্ট বাংলাদেশ দিবস বাস্তবায়ন না করেও পলক সিন্ডিকেট তুলে নিয়েছে এক কোটি ৮৯ লাখ টাকা।অনুসন্ধানে আরো দেখা গেছে, পলক সিন্ডিকেট দুই ধরনের ভুয়া সেমিনার ও প্রশিক্ষণ আয়োজন করত। একটি হলো দিবসকে কেন্দ্র করে, আরেকটি অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অভিপ্রায়ে। বিভাগের অডিট রিপোর্টে দেখা গেছে, প্রতিবছর ২০ থেকে ২৫টি ভুয়া সেমিনারে অংশগ্রহণ দেখিয়ে জুনিয়র কর্মকর্তাদের দিয়ে বিল ভাউচারে স্বাক্ষর করিয়ে কয়েক বছরে তুলে নেওয়া হয়েছে কোটি কোটি টাকা। দিবস পালনের টাকা উত্তোলন করা হতো পলকের নিজস্ব কিছু প্রতিষ্ঠানের নামে। এর মধ্যে উইন্ডমিল অ্যাডভারটাইজিং, গ্রে অ্যাডভারটাইজিং, ইজি টেকনোলজি, এশিয়াটিক ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট অন্যতম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *