আজ শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৪৯ অপরাহ্ন
ডেস্ক নিউজ :-
চট্টগ্রাম নগরীর জে এম সেন হলে দুর্গাপূজার মহাসপ্তমীর অনুষ্ঠানে ইসলামি সংগীত পরিবেশন করার ঘটনায় চট্টগ্রাম পূজা পরিষদের সভাপতি ও সম্পাদককে অব্যাহতি দিয়েছে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ।
আর মণ্ডপে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ‘সুষ্ঠুভাবে পরিচালনায় ব্যর্থতার’ অভিযোগে চট্টগ্রাম মহানগর কমিটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সজল দত্তকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
শুক্রবার বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের দপ্তর সম্পাদক শচীন্দ্র নাথ বাড়ৈয়ের সই করা এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘দায়িত্ব যথাযথভাবে পালনে ব্যর্থতার’ কারণে সভাপতি আশীষ ভট্টাচার্য ও সম্পাদক হিল্লোল সেনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর ও সাধারণ সম্পাদক সন্তোষ শর্মা বলেন, “এই অবাঞ্ছিত ঘটনায় হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ অত্যন্ত বেদনাহত হয়েছে। পূজা পরিষদ এই ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত ও জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছে।
“একইসাথে পূজা উদযাপন পরিষদ দৃঢ়তার সঙ্গে বলেছে, শারদীয় দুর্গাপূজা যাতে সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হয়, সেজন্য সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।”
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে নগরীর জে এম সেন হলে চট্টগ্রাম মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদ আয়োজিত দুর্গা পূজার মহাসপ্তমীর আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলাকালে ‘চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমি’ নামের একটি সংগঠন দুটি গান পরিবেশন করে।
প্রথমে ‘গ্রামের নওজোয়ান হিন্দু মুসলমান’ গান পরিবেশন করে। পরে তারা ‘শুধু মুসলমানের লাগি’ শিরোনামে আরেকটি গান গায়, যার গীতিকার ও সুরকার চৌধুরী আবদুল হালিম।
ওই গান পরিবেশনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর সেখানে হিন্দুদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়। পরে সেনাসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য বাড়ানো হয়। ক্ষুব্ধ সনাতন ধর্মালম্বীরা সেখানকার সামনের সড়কে বিক্ষোভও করেন।
পরে ডিসি ফরিদা খানম মণ্ডপে গিয়ে বক্তব্য দেন এবং জড়িতদের গ্রেপ্তার ও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে মামলা করার আশ্বাস দেন।
রাতে মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি আশীষ ভট্টাচার্য মঞ্চে উঠে ঘটনার বিষয়ে দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা প্রার্থনা করেন এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িত পূজা কমিটির যুগ্ম সম্পাদক সজল দত্তকে বহিষ্কারের ঘোষণা দেন।
শুক্রবার সকালে ওই ঘটনায় দুই জনকে আটকের কথা জানায় পুলিশ। পরে পূজা উদযাপন পরিষদের পূজা কমিটির অর্থ সম্পাদক সুকান্ত বিকাশ মহাজন সাতজনকে আসামি করে কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
এ ধরনের ঘটনা সুন্দর প্রচেষ্টাকে ব্যর্থ করে দিতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের বিবৃতিতে বলা হয়, “এ ব্যাপারে সরকার, সেনাবাহিনী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, রাজনৈতিক দল ও ছাত্র সমাজকে এক হয়ে কাজ করতে হবে এবং দুর্বৃত্তদের প্রতিহত করতে হবে, এর কোন বিকল্প নেই।”