আজ রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৪১ অপরাহ্ন

Logo
News Headline :
৫০ সেঞ্চুরির স্বপ্ন পূরণ করলেন বিজয় শেখ হাসিনার পক্ষে অনলাইন সভা, ববি শিক্ষকদের ভিডিও ঘিরে সমালোচনার ঝড় বাংলাদেশের মাঠ হলেও প্রথম দিন ছিল জিম্বাবুয়ের নির্বাচন ছাড়া সরকার দীর্ঘদিন থাকলে ফ্যাসিবাদের জন্ম হয় : আব্দুস সালাম বৈষম্যবিরোধী দুই নেতার নেতৃত্বে প্রাইম এশিয়ার পারভেজকে হত্যা, দাবি ছাত্রদলের সরকার দেশের ৫০ ভাগ মানুষকে বাদ দিয়ে সংস্কার প্রস্তাব করছে : জিএম কাদের পারভেজ হত্যা: ৮ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা আসিফ মাহমুদ ও মাহফুজ আলমের পদত্যাগ দাবি করলেন নুর নওগাঁর বদলগাছীতে গুচ্ছগ্রামের খাল জোরপূর্বক দখলের অভিযোগ ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে কমলগঞ্জে ট্রাক্টর উল্টে ইট চাপায় চা শ্রমিক নিহত, আহত-২
শ্রীমঙ্গলের সাতপীরের মাজার ধ্বংসের পায়তারা করছে স্বার্থান্বেষী মহল 

শ্রীমঙ্গলের সাতপীরের মাজার ধ্বংসের পায়তারা করছে স্বার্থান্বেষী মহল 

নিজস্ব প্রতিনিধি মৌলভীবাজার 

নানা ফন্দি এটে সাতপীরের মাজার ধ্বংসের পাঁয়তারায় লিপ্ত হয়ে উঠেছে এলাকার প্রভাবশালী একটি স্বার্থান্বেষী মহল। মাজারের ভক্তবৃন্দরা এসব অভিযোগ তোলেন।

অপরদিকে এলাকার একটি পক্ষ এর পাল্টা হিসেবে পূর্ব-শ্রীমঙ্গল গ্রামে গড়ে তোলা সাতপীরের মাজার উচ্ছেদের দাবি তুলেছেন। এ নিয়ে মাজারের ভক্তবৃন্দ ও মাজার বিরোধীদের মধ্যে চরম উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। উভয় পক্ষই লিখিত আবেদনের মাধ্যমে জেলা ও উপজেলা প্রসাশনের কাছে দ্বারস্থ হয়েছে।

স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, মাজার নিয়ে যে কোনো মুহূর্তে বিবদমান পক্ষের অনুসারীরা দাঙ্গা হাঙ্গামার মতো ঘটনা ঘটাতে পারে। এমন অবস্থার উত্তরণ ঘটাতে পুলিশ এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে আদালতে একটি নন এফআইআই প্রসিকিউশন আদালতে দাখিল করেছে। নন এফআইআর নং ০৩/২০২৫, তারিখ ১০/০১/২৫ইং।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শ্রীমঙ্গল উপজেলার সদর ইউনিয়নের পূর্ব-শ্রীমঙ্গল গ্রামে ‘নূরে দরবারিয়া সাতপীরের মাজার শরীফ’ ২০১১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০০১ সালে মোতাহির আলী হজ্ব পালনকালে স্বপ্নযোগে এ মাজারের প্রাপ্ত হন। এরপর থেকেই দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ভক্তবৃন্দরা মাজারে আসতে শুরু করেন।

ভক্তবৃন্দরা জানান, সাতপীরের মাজার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর স্থানীয় মসজিদের ইমাম মাওলানা জয়নাল আবেদীন ও এলাকার মুরুব্বিদের উপস্থিতিতে দোয়া মাহফিলের মাধ্যমে মাজারের আনুষ্ঠানিকতা কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর পাশর্বর্তী আরেকটি মাজার হয়রত শাহ কামাল ইয়ামানি (র:)  খাদেম আব্দুল সালাম রাজা ও প্রতিবেশি আবুল হোসেন সাত পীরের মাজার বন্ধের ব্যাপারে নানা ফন্দি এটে প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। সেসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে আইনি কার্যক্রম হাতে নেয় পুলিশ।

ভক্তরা আরো জানিয়েছেন, এ মাজারের ভক্তবৃন্দ দেশ ছাড়িয়ে প্রবাসেও ছড়িয়ে পড়েছে। প্রতিদিন মাজারে ভক্তবৃন্দের ভিড় লেগেই থাকে। প্রতিদিন সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত মাজারের খাদেম ভক্তবৃন্দের সঙ্গে সাক্ষাত দেন। এ মাজারের বৈশিষ্ট্য হলো ভক্তবৃন্দরা কোরআন তিলাওয়াত, দু’রাকাত নফল নামাজ আদায় ও তসবীহ পাঠ এবং দোয়া। এর বাইরে ভিন্নধর্মালম্বী ভক্তরাও এ মাজারে নিয়মিত আসেন।

এদিকে মাজারকে ঘিরে দাঙ্গা-হাঙ্গামার আশঙ্কা প্রকাশ করে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রেরিত একটি গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘পূর্ব শ্রীমঙ্গল গ্রামে ‘সাত পীরের মাজারের অস্তিত্ব আগে ছিল না। এমনকি স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেও বানানো মাজারে কাউকে দাফন করার তথ্যও পাওয়া যায়নি। হঠাৎ মাজারের খাদেম ওই গ্রামের নূর মিয়ার ছেলে মোতাহির আলী (৪৫) স্বপ্নযোগে প্রাপ্ত হয়ে সাতপীরের মাজার সৃষ্টি করেন। এবং তা ধীরে ধীরে দেশ-বিদেশে প্রকাশ পেয়েছে’। মাজারকে ঘিরে অসামাজিক কার্যকলাপ, নাচ-গান, বেহায়াপনা ও মদ, গাঁজা, মাদকের ছড়াছড়ি নেই। তবে ভক্তবৃন্দ চাইছে মাজার টিকে থাকতে এবং এলাকার একটি পক্ষ সাতপীরের মাজার উচ্ছেদ করতে চাইছে বলে ওই গোয়েন্দা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে’।মাজারে আসা কমলগঞ্জ উপজেলার ভানুগাছের মাহবুব করিম চৌধুরীর ছেলে নূরে রাকিব চৌধুরী বলেন, ‘এখানে কোনো বাজে কাজ হয় না। নিজের সমস্যায় আম্মুকে নিয়ে মাজারে এসেছি। এর সমাধানও পেয়েছি। একই এলাকার শরীফও বললেন তা স্ত্রীকে নিয়ে মাজারে এসেছিলেন উপকার পেয়েছেন।ইসলামী ব্যাংক মৌলভীবাজার শাখার চাকরিজীবী কামরুল হুদা বলেন, ‘আমি দু’বার আমার স্ত্রীকে নিয়ে সমস্যায় পড়ে মাজারে গিয়েছি। খারাপ কিছু দেখিনি’। একই কথা জানালেন রফিক মিয়া, শরীফ মিয়া ও আব্দুর রহিম।মাজারে গিয়ে শহরতলীর সবুজ বাগ আবাসিক এলাকার কমরু মিয়ার স্ত্রী সুফিয়া বেগম (৩০) এর সাথে কথা হয়। সুফিয়া বলেন, ‘আমার ছেলে মোফাজ্জল দুই বছর আগে পাগল ছিল। মাজারে এসে আমার ছেলে ভাল হয়’। এ সময় সুফিয়ার সাথে আরও ২০/২৫ জন ভক্ত মাজারে পাওয়া যায়।লাকার মুরব্বী মো. মকবুল মিয়া (৬৫) বলেন, ‘সাতপীরের মাজারের বাড়িটি আমার বাবার ছিল। খাদেম মোতাহির আলীর বাবা নূর মিয়ার কাছে তিনি বিক্রি করেন। সেখানে মোতাহির আলী রাতের বেলা একেক করে সাতটি কবরস্থান তৈরি করে। এ প্রসঙ্গে ‘নূরে দরবারিয়া সাতপীরের মাজার শরীফের খাদেম মোতাহির আলী বলেন, ‘আমি ২০০১ সালে হজ্ব করি। হজ্ব পালনকালে আমার গায়ে হালকা বাতাস লেগে আমার ঘুম এসে যায়। তখন স্বপ্নে পড়ে দেখি আমার বাড়িতে নূরে দরবারিয়া মাজার শরীফের আকৃতি। প্রায় ৮ বছর খেদমত করার পর ২০১১ সালে মাজার তৈরি করি।

সাত পীরের নাম জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সাতপীরের নাম আমার কাছে এখনো আসে নাই। শুধু নূরে দরবারিয়া মাজার শরীফ এর নাম এসেছে’।এব্যাপারে জানতে চাইলে অভিযোগকারী আব্দুস সালাম রাজা বলেন, আমিতো কোন অভিযোগ করি নাই। একপর্যায়ে তিনি বলেন, আমরা ছোট বেলা দেখে আসছি সেখানে আগে কোনো মাজার ছিল না। সেখানে বাঁশঝাড়,বিভিন্ন গাছগাছালি ছিল। সেই জায়গায় সাতপীরের মাজার সৃষ্টি করেছে, এনিয়ে অভিযোগ।

শ্রীমঙ্গল থানার উপ-পরিদর্শক মো. মহিবুর রহমান বলেন, ‘শান্তিশৃঙ্খলা বজায় এবং কেউ যেন বিশৃঙ্খলা করতে না পারে এসব প্রেক্ষিতে আদালতে প্রসিকিউশন দাখিল করেছি।

Please Share This Post in Your Social Media

All rights reserved © 2024 ourdailybangladesh.com