আজ শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৫৫ অপরাহ্ন
খেলা ডেস্ক :-
কানপুর টেস্টের আগে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি এবং টেস্ট থেকে বিদায়ের ঘোষণা দেন সাকিব আল হাসান। তারকা অলরাউন্ডার অবসরের ঘোষণার সময় জানিয়েছিলেন, নিরাপত্তার নিশ্চয়তা পেলে দেশে ফিরে মিরপুরে সাউথ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট খেলে সাদা পোশাকের ক্রিকেটকে বিদায় বললেন। তাকে নিরাপত্তা দেয়া নিয়ে আবারও মুখ খুলেছেন প্রধান উপদেষ্টার যুব এবং ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ।
রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর সাকিবের নামে হত্যা মামলা হয়। এ ছাড়া শেয়ারবাজারের একটি মামলায় ৫০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয় তাকে। সাম্প্রতিক সময়ে সাকিবের বিপক্ষে স্লোগান দিয়ে মিরপুর শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বিক্ষোভ করেন বাংলাদেশ দলের কিছু সমর্থক।
২১ অক্টোবর সাউথ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ। সময় এগিয়ে গেলেও এখনও দেখা নেই সাকিবের। এদিকে দেশে ফিরতে নিরাপত্তা ঝুঁকিতেও আছেন তিনি। যদিও তাকে কঠোর নিরাপত্তা দিতে সোচ্চার ক্রীড়া উপদেষ্টা।
আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘একজন ক্রিকেটার তিনি খেলবেন এবং তিনি বাংলাদেশের নাগরিক, আসার ক্ষেত্রে তো কোনো বাধা আমি দেখি না। তবে যেটা দেয়াল লিখনের কথা বলছেন বা সোশাল মিডিয়ায় কিছু দেখেছি, এটা তো আসলে আবেগের ব্যাপার। তাদেরও ওই অধিকার আছে। গণতান্ত্রিক দেশ, সাংবাদিক অধিকার যেকোনো ধরনের মুভমেন্ট বা যেকোনো কিছু করার। তবে এক্ষেত্রে আমার ইয়ে থাকবে কারো নিরাপত্তা যেন হুমকির মুখে যেন না ফেলি।’
‘যদি আইনগত কোনো বিষয় থাকে, আইন তো আইনের গতিতে চলে। এ বিষয়ে তো আমি কোনো মন্তব্য করতে পারবো না। তো তবে নিরাপত্তার বিষয়ে সর্বোচ্চ শ্রদ্ধাশীল হওয়া উচিত। যেহেতু সাউথ আফ্রিকা আসবে, আমাদের পরিবেশটাও ভালো রাখতে হবে। না হলে বাইরের দেশগুলো বাংলাদেশে খেলতে আসতে নিরাপত্তার অভাবটা অনুভব করবে।’
একই সঙ্গে সাকিবের দেশত্যাগেও কোনও বাধা দেখছেন না আসিফ মাহমুদ। সেক্ষেত্রে বিষয়টি আইন মন্ত্রণালয়ের ওপর ছেড়ে দিচ্ছেন তিনি, ‘দেশে আসা কিংবা বাইরে যাওয়ার ক্ষেত্রে কোনো বাধা তো থাকার কথা না। আমি যতটুকু জানি। আর আইনের বিষয়টা আইন মন্ত্রণালয় ব্যাখ্যা করতে পারবে। আমি বিশেষজ্ঞও না কিংবা আইন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বেও না।’
‘আইন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আমাাদেরও কথা হয়েছে। আসিফ নজরুল স্যার ইতোমধ্যে বলেছেন সংশ্লিষ্টতা না পেলে প্রাথমিক তদন্তেই আসলে যে মামলা হয়েছে হত্যা মামলা। ওখান থেকে নাম বাদ পড়ে যাবে।’
সাকিব আওয়ামীলিগ সরকারের একজন সাংসদ ছিলেন এবং জুলাই-আগস্টের গণহত্যার সময় নিশ্চুপ ভূমিকা পালন করেছিলেন। এ নিয়ে কদিন আগে ক্ষমা চেয়ে একটি পোস্টও দেন সাকিব। তবুও জনমনে তাকে নিয়ে ক্ষোভ রয়ে গেছে। সাকিবের ওপর ক্ষোভ থাকলেও বাংলাদেশের মানুষ আইন হাতে তুলে নেবে না বলেই বিশ্বাস আসিফের।
তিনি আরও বলেন, ‘রাষ্ট্রের জায়গা থেকে প্রত্যেক নাগরিকেরই নিরাপত্তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। এবং ক্রিকেট দলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাও রাষ্ট্রের দায়িত্ব। সেটা আমরা নিশ্চিত করবো। এবং আমি মনে করি যে আবেগের জায়গাটা অবশ্যই আছে। যেহেতু বড় একটা আন্দোলন হয়েছে এবং সাকিবের আগের ফ্যাসিবাদি সরকারের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। যেটা উনি ক্লিয়ারেন্স দিয়েছেন উনার পোস্টে। তারপরও কিছু ইমোশন রয়ে গেছে। লজিক্যাল বা ইলজিক্যাল আমি ওই প্রশ্নে যাবো না। সেটা অন্য বিতর্ক।’
‘তবে কোনো আইনি সমস্যা এখন পর্যন্ত নেই এমনটা দেখা যাচ্ছে। আইন তো আসলে আইনের মতো চলে। সেটা তো আমি বলতে পারবো না। আইন মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে আসিফ স্যার একটা কথা বলেছে। তবে আমার মনে হয় বাংলাদেশের মানুষ যথেষ্ট আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। এবং এটা ইতোপূর্বে প্রমাণিত হয়েছে। বাংলাদেশে এত বড় একটা অভ্যূত্থান হয়েছে। এরপর আসলে যেটা হয় বিভিন্ন দেশে যে ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হয়। সেক্ষেত্রে মানুষ আইনের প্রতি যথেষ্ট শ্রদ্ধাশীল জায়গাটা ধরে রেখেছে। আমরা ওই ধরনের পরিস্থিতির দিকে আসলে এত বেশি যাই নাই। সবাই প্রত্যাশাও করছিল খুব বাজে অবস্থা হবে।’